প্রতিনিধি 28 August 2025 , 4:28:06 প্রিন্ট সংস্করণ
রিপন হোসেন সাজু,
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের গৃহবধু শিউলি রানী দে, সাজেদা বেগম, কহিনুর বেগম, খলিলুর রহমান, শাহিনারা খাতুন পান্না, খালেক মোল্যা ও তহমিনা বেগম। তারা সবাই প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় ছিল। অথচ এদের কেউই প্রতিবন্ধী নয় বলে অভিযোগ ছিল স্থানীয়দের। যার প্রক্ষিতে গত ১৮ জুলাই বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়” মনিরামপুরে নেহালপুর ইউনিয়নে টাকার বিনিময়ে সুস্থ মানুষকে প্রতিবন্ধী বানিয়ে দেন” শিরোনামে একটি তথ্য বহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর উপজেলা প্রসাশনসহ সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এলাকায় শুরু হয় তোলপাড়। এরপর তদন্তে অনুসন্ধানে নামে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদে চলে সকল প্রতিবন্ধী কার্ডের যাচাই-বাছায়ের তদন্ত। যাচাই-বাছায়ের তদন্ত শেষে জানা গেছে, নেহালপুর ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ১০ জন প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী রয়েছে। তার মধ্যে যাচাই-বাছায় বোর্ডে হাজির হন ৫৬৯ জন। তার মধ্যে চুড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত হন ৩৫৬ জন। তবে ২১৩ জন পেন্ডিং (প্রাথমিক ভুয়া) প্রতিবন্ধী কার্ডের অস্তিত্ব মিলেছে। তবে ৪৪১ জন প্রতিবন্ধী কার্ডের ভাতাভোগী যাচাই-বাচাই বোর্ডে উপস্থিত হয়নি। যা মোট ভাতাভোগীর অর্ধেক। স্থানীয়রা দাবী করেছে, যারা যাচাই বোর্ডে হাজির না হওয়া মানে তারা ভুয়া প্রতিবন্ধী বলে প্রমাণিত হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, প্রাথমিক যাচাই-বাছায়ে আমরা অনেক ভাতাভোগীর ত্রæটি পেয়েছি। তার মধ্যে ২১৩ পেন্ডিং রয়েছে। তারা উপযুক্ত তথ্য নিয়ে আসলে পুনরায় যাচাইয়ের সুযোগ রয়েছে। সমাজসেবা কর্মীদের সর্ম্পকে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না। তবে এ ধরনের কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত সরদার, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি এম খলিলুর রহমান, ফিল্ড সুপারভাইজার ফারুক হোসেন, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জহিরুল ইসলামসহ কার্যালয়ে কর্মরত ইউনিয়ন সমাজকর্মীসহ ইউপি সদস্যরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালে নেহালপুর ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৮১ জনের। যার অর্ধেক মানুষ প্রতিবন্ধী নয়। তাদের অভিযোগ, প্রকৃত প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় হীরা মেম্বার, সাবেক সমাজসেবা কর্মী কানন বালা ও অফিসের মাঠকর্মী রেহেনার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তিদের নামে ভাতার কার্ড করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলে আসছে।