প্রতিনিধি 5 February 2025 , 12:23:19 প্রিন্ট সংস্করণ
রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর)
একগুচ্ছ নান্দনিক উদ্যোগে নব রুপে এগিয়ে চলেছে মনিরামপুর পৌরশহর। এই উদ্যোগের আওতায় ইতিমধ্যে পৌরশহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন, ময়লার ভাগাড় দূরীকরণে ডাস্টবিনের ব্যবহার, বেদখলে থাকা যাত্রী ছাউনিসহ প্রভাবশালীদের কব্জায় থাকা মূল্যবান জমি উদ্ধার পূর্বক সৌন্দর্য্যবর্ধন ও শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে মিনি পার্ক। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না মনিরামপুর পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে এসব সাহসী পদক্ষেপে নানা শ্রেণি পেশার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। জানাযায়, গেলো ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনে পর প্রায় ৫ লাখ জনঅধ্যুষিত দেশের বৃহত্তম এ উপজেলায় একজন নারী ইউএনও’র যোগদানের খবর অনেকেই বাঁকা চোখে দেখেছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতি সামাল দেয়া নিয়েও চলেছে আলোচনা-সমালোচনা। কিন্তু গত ১১ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আজ অবধি নানা প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে নিজ কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। আইনশৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে রাজনৈতিক দল, সামাজিক,সাংস্কৃতিক, ছাত্র ও ধর্মীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে দফায় দফায় সভা করেছেন। তিনি একই সাথে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক এবং উপজেলার একশ’ ৭০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। গত মধ্যে আগস্টে ভয়াবহ বন্যায় ভবদহ বিলপাড়ের বানভাসিদের পাশে দাড়িয়েছেন। বন্যাকবলিতদের স্যানিটেশন সুবিধা প্রদানে এক ইউনিক ধারনায় তৈরী করেন ‘ভাসমান টয়লেট’,যা দেশব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছেন। পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধূরী বলেন, ব্যবসায়ী সমাজের নিরাপত্তা ও জানযট নিরসনে পৌরশহরকে সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, ডাসটবিন ব্যবহারের প্রচলনসহ দীর্ঘদিন বেদখলে থাকা যাত্রী ছাউনি উদ্ধারপূর্বক মিনি পার্ক গড়ে তোলা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখেন। বন্যা কবলিত এলাকা কুলটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের মানবিক সহায়তাসহ নানা দাবিতে যখনি ইউএনও স্যারকে বলেছি ,তিনি এগিয়ে এসেছেন’। সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সভাপতি অধ্যাপক আব্বাস উদ্দীন বলেন, পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রভাবশালীদের কব্জা থেকে মূল্যবান জমি দখলমুক্ত করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে জনগনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন তিনি। ভবিষ্যত কল্যাণকর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, এখানে আমি চির স্থায়ী থাকবো না, কিন্তু যতদিন আছি। এমন কিছু করে যেতে চাই, যাতে মানুষ আমাকে স্মরণ করবেন।
মনিরামপুরে স্কুলের শহীদ মিনার ভেঙ্গে টয়লেট
নির্মাণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শোকজ
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙ্গে ওয়াশরুম (টয়লেট) করার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ স্থানীয় কুশোরীকোনা-কামিনীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক সুকুমার মল্লিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান। বুধবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সরজমিনে তদন্ত করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে ৩ কার্য দিবসের মধ্যে উক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশারীকোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান দুটিই একই প্রাঙ্গনে অবস্থিত। ওই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গনে প্রায় ৩০বছর আগে একটি শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। উক্ত শহীদ মিনারে ওই দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছে। গত ১৫ জানুয়ারী কুশারীকোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ওই শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলে একই স্থানে ওয়াশরুম স্থাপন করার উদ্যোগ নেন। শহীদ মিনার ভেঙ্গে ফেলায় এবার শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুদ্ধ ছিল। প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, মাঠে পানি থাকায় জায়গা সংকটে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে শহীদ মিনার ভেঙে ওয়াশব্লক করা হচ্ছে। অচিরেই নতুন করে একটি শহিদ মিনার করা হবে। কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন সরকার বলেন ,আমাদের সাথে কোন পরামর্শ না করেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদ মিনা ভেঙ্গে ফেলেছেন। মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে পাঠিয়েছি। মনিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবু মোত্তালেব আলম বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে।