অন্যান্য

মনিরামপুরে গৃহবধূকে জবাই করে হত্যা বিক্ষুদ্ধ জনতার চাতাল, রাইসমিল ভাঙচুর, বাড়ি লুট

  প্রতিনিধি 29 April 2025 , 1:06:56 প্রিন্ট সংস্করণ

রিপন হোসেন সাজু :

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের খাটুয়াডাঙ্গা গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর জবাইকৃত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা আফতাব মুন্সি মোড়ের একটি চাতাল ঘর থেকে পুলিশ তাঁর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। ওই গৃহবধূর নাম স্বরূপজান সাথী (৩৫)। তিনি উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রশীদ মিন্টুর (৫০) স্ত্রী। তিনি চাতালে শ্রমিকের কাজ করতেন। এই ঘটনার পর বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী আব্দুর রশীদের চাতাল ও চালকল ভাংচুর করেছে। এ সময় তাঁর চাতাল ও চালকল সংলগ্ন বাড়ির আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, মনিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের মুন্সির মোড় এলাকায় আব্দুর রশীদ মিন্টুর একটি ধানের চাতাল এবং একটি চালকল আছে। আব্দুর রশীদ মিন্টুর আগে একজন স্ত্রী রয়েছে। কয়েক বছর আগে আব্দুর রশীদ মিন্টু সাথীকে বিয়ে করেন। পরে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। দেড় বছর আগে তাঁরা পুনরায় বিবাহ করেন। সাথী চাতালের একটি ঘরে থাকতেন। তিনি চাতালে কাজ করতেন। সোমবার সকালে কয়েকজন শ্রমিক চাতালে কাজ করতে এসে ঘরে সাথীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। পরে তাঁরা বিষয়টি এলাকাবাসীদের জানান। এরপর এলাকাবাসীরা পুলিশে খবর দেন। মনিরামপুর থানা ও নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে দুপুর ১২টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে। এরপর দুপুর এক টার দিকে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী আব্দুর রশীদ মিন্টুর চাতাল ও চালকল ভাংচুর করে। এ সময় কিছু লোকজন তাঁর চাতাল ও চালকল সংলগ্ন বাড়ির আসবাবপত্র লুট করে। স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রশিদ মিন্টু একসময় অস্ত্র কেনাবেচার কাজ করতেন। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। এরপর প্রায় ১০ বছর সাজা খেটে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে সাথীকে বিয়ে করেন। পুলিশ জানায়, রবিবার দিবাগত রাতে সাথীকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর গলা, মাথা এবং কপালে ধারালো অস্ত্রের আনেকগুলো কোপের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা, আব্দুর রশীদ তাঁর স্ত্রীকে জবাই হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে আব্দুর রশীদ, তাঁর বড় স্ত্রী ও ছেলে এবং পূত্রবধু পলাতক রয়েছেন। সাথী আক্তারের মা আলেয়া বেগম বলেন, সাথী আমার একমাত্র মেয়ে। চার মাস আগে ওর বাপের জমি বেচে আব্দুর রশীদ মিন্টুকে চার লাখ টাকা দিয়েছি। আরও এক লাখ টাকা মিন্টু চেয়েছে। টাকা না দেওয়ায় মিন্টু আমার মেয়েকে খুন করেছে। আমি মিন্টুর ফাঁসি চাই। আলেয়া বেগম আরও বলেন, সাথীর প্রথম স্বামীর ঘরে দুই ছেলে আছে। সেখানে অমিল হওয়ায় ছেলে দুটোকে নিয়ে মেয়ে আমার বাড়ি থাকত। চার বছর আগে মিন্টু আমার বাড়ি যেয়ে সাথীকে চাতালে কাজের জন্য নিয়ে আসে। এরপর একদিন মিন্টু আমার মেয়েকে চাতালে ফেলে ধর্ষণ করে। আমি জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে মিন্টু সাথীকে কাজী অফিসে নিয়ে বিয়ে করে। প্রায় মিন্টু সাথীকে মারধর করতো। মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, স্বরূপজান সাথীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর গলা, মাথা এবং কপালে ধারালো অস্ত্রের আনেকগুলো কোপের চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ