সারাদেশ

মনিরামপুরে জনস্বাস্থ্য প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ সাত বছরে শত কোটি টাকা বরাদ্দ, বাস্তবে অগ্রগতি প্রশ্নবিদ্ধ!

  প্রতিনিধি 25 July 2025 , 12:03:02 প্রিন্ট সংস্করণ

মনিরামপুর (যশোর)প্রতিনিধি।

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ২০১৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে বাস্তবায়নযোগ্য বহু উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাস্তব মাটিতে এর অগ্রগতি নেই বললেই চলে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগই কাগজে-কলমে সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান নয়। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, প্রকল্প বিলম্ব এবং দায়িত্বে গাফিলতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র জানায়, মনিরামপুর পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে নিরাপদ পানি সরবরাহ, টিউবওয়েল স্থাপন, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, দরিদ্র পরিবারে স্যানিটেশন সুবিধা, সাব-মার্সিবল টিউবওয়েল বসানো, ওয়াশ ব্লক নির্মাণ এবং পৌর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি নানা প্রকল্প বরাদ্দ পায়। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অধিকাংশ কাজ ঠিকভাবে শুরুই হয়নি, আবার কিছু স্থানে সামান্য যা করা হয়েছে, তার মান অত্যন্ত নিম্নমানের এবং ব্যবহার অনুপযোগী।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬০০টিরও বেশি সাব-মার্সিবল টিউবওয়েল বসানোর প্রকল্প বরাদ্দ পেলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পগুলো এখনও অফিসের ফাইলেই সীমাবদ্ধ। এ ছাড়া ২০২২-২৩ সালে বরাদ্দ পাওয়া ৪০০টির বেশি টিউবওয়েলেরও বাস্তব প্রয়োগ পাওয়া যায়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বন্যাকবলিত এলাকায় টিউবওয়েল স্থাপন, সড়ক নির্মাণ ও ওয়াশ ব্লক প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে।

ওয়ার্ড-৬ এর বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, “আমার এলাকায় ২০২৩ সালে টিউবওয়েল বসানোর কথা ছিল, কিন্তু আজও কেউ কাজ করেনি। কেবল তালিকায় নাম ছিল।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগ, বিল অনুমোদন এবং তদারকি—সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন মনিরামপুর জনস্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়দেব দত্ত। তার বিরুদ্ধে কাজ বিলম্ব, ঠিকাদারদের হয়রানি ও কমিশনের দাবির অভিযোগ বহুবার উঠেছে।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় জয়দেব দত্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতির জন্য রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও ঠিকাদারদের অনীহাকে দায়ী করে বলেন,

“সব জায়গায় টাকা দেওয়া লাগে। ঠিকাদাররা কাজ করতে ভয় পাচ্ছে। কারণ বাইরে থেকে লোক আসবে। আপনি যদি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সামাল দিতে পারেন, তাহলে আমি ২ লাখ ৬১ হাজার টাকা নিয়ে কাজ দিয়ে দেব।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার এমন মন্তব্য তার নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে চলা এবং অনৈতিক কার্যক্রমেরই ইঙ্গিত দেয়। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও স্বচ্ছতার অভাব স্পষ্ট হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব নিশাত তামান্না বলেন,গত উপজেলা পরিষদ মাসিক সভায় সব মার্সিবল টিওবয়েল এর উপকারভোগী সিলেকশনে উপকারভোগীর তালিকা নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে তালিকা যাচাই-বাছাই এর জন্য, এছাড়াও টিওবয়েল স্থাপনের সময় লেবারদের টাকাও খাবার উপকারভোগীর দিতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়ায় বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, তদন্ত রিপোর্ট পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ