রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর) ঃ
যশোরের মনিরামপুরে দেশের একমাত্র খেজুরগাছ
রিসার্চ গার্ডেন জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি বছরে অতি বৃষ্টিপাতের কারণে পানি
জমে প্রায় সব খেজুর গাছই মরে গেছে। এই অবস্থায় সেখানে গবেষণা কাজ চালিয়ে যাওয়া
কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপর আবার বেঁচে থাকা গাছ গুলোর উপর চলছে জমি জটিলতা নিয়ে
অত্যাচার বলে জানিয়েছেন গবেষক। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চার বছর আগে (৩১ আগস্ট-
২০২১) মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী শ্যামকুড় ইউনিয়নের নাগরঘোপ গ্রামে জেলা
প্রশাসনের দেওয়া জমিতে রিসার্চ গার্ডেনটি গড়ে তুলেছিলেন খেজুরগাছ গবেষক সৈয়দ
নকিব মাহমুদ। উচ্চ ফলনশীল খেজুরের রস উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রোপণ করা হয়েছিল সেখানে
খেজুরের ১২০ টি চারা। এগুলো বড় হলে তা থেকে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১৪ লিটার পর্যন্ত
রস পাওয়া যেত। সৈয়দ নকিব মাহমুদ গাছগুলোর নামকরণ করেছিলেন রসবতী-১, রসবতী-২ এভাবে।
গার্ডেনটিতে মোট ৮ ধরনের খেজুরগাছ ছিল। কিন্তু এবার যশোরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ওই
বাগানে পানি জমে ১১৩ টি গাছ মরে গেছে। আর ৭টি খেজুরগাছ বেঁচে আছে। কিন্ত
তারপর চলছে জমির মালিকানার জটিলতা নিয়ে অত্যাচার। গবেষক সৈয়দ নকিব মাহমুদ বলেন,
পানিতে খেজুরগাছের চারা ৪০ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এখনো সেখানে পানি জমে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, খুঁজে পাওয়া ৭টি ভিন্ন জিনোম সিকোয়েন্সের গাছ ব্যাকআপ
গার্ডেনে আছে। কিন্তু একেকটা একেক জায়গায়। যে কারণে ভবিষ্যতে গবেষণাকাজ চালিয়ে
যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নতুন করে এই বাগান সম্পূর্ণ করা আরও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ
খুঁজে পাওয়া গাছের মধ্যে মাত্র ৪টি মাতৃগাছ জীবিত আছে। বাকি ৪টি মারা গেছে।
যদিও তার কাছে ৮ ধরনের গাছই আছে। কিন্তু সেগুলো বয়সে অনেক ছোট। প্রশাসনের
সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ এগিয়ে নেওয়া কঠিন। ওই জমিতে মাটি দিয়ে উঁচু করলেও
সমস্যার সমাধান হতে পাওে বলে তিনি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মনিরামপুর উপজেলা কৃষি
কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় খেজুরগাছ রিসার্চ
গার্ডেনটি জলাবদ্ধতার কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছগুলো রোপণের সময়ই জমি
উঁচু করা দরকার ছিল। যে গাছগুলো বেঁচে আছে সেগুলো রক্ষা এবং নতুন গাছ রোপণের জন্য যে
ধরনের সহযোগিতা দরকার, সে ব্যাপারে ভূমিকা রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, যেহেতু জলাবদ্ধতার কারনে অধিকাংশ গাছ মারা
গেছে। তারপরেও আমরা নতুন করে বেঁচে থাকা গাছগুলো কিভাবে রক্ষা করা যায় এবং জমি
জটিলতার ব্যাপারে আমাদের এসিল্যান্ড কাজ করছেন।