প্রতিনিধি 26 August 2025 , 9:07:37 প্রিন্ট সংস্করণ
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক পদের চেয়ার দখল ও সরকারী অর্থ উত্তোলন করে ভোগ করে আসছেন মনিরামপুরের হাটগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কথিত প্রধান শিক্ষক সনজিৎ কুমার বিশ্বাস। আর তার এসকল কার্যের সহযোগীতা করেছেন দু’জন সরকারী কর্মকর্তা। বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা ঝড় ওঠে। বিষয়টি সুষ্টু তদন্ত ও বিচারের দাবী জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণলায়সহ সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা যায়, হাটগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সনজিৎ কুমার বিশ্বাস ২০২৩ সালে ২৪ ডিসেম্বর এক ইন্টারভিউ মাধ্যমে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নির্বাচিত হন। তৎকালীন মনিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার তার নিয়োগ পাইবার সকল ব্যবস্থা করেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা না থাকা সত্তে¡ও সনজিৎ কুমারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিক্ষকগত যোগ্যতায় একাধিক তৃতীয় বিভাগ ধারী যেখানে প্রধান শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করার সুযোগ নেই। সেখানে একাধিক তৃতীয় বিভাগধারী সনজিৎ কুমার বিশ্বাসকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মনোনীত করা হয়।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, সনজিৎ কুমার বিশ্বাস ১৯৯২ সালে এইসএসসি এবং ১৯৯৫ সালে বিএ পাশ পরীক্ষা বিভাগে উর্ত্তীন হন।
জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী ক্রমিক নং-৯ এ বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে একের অধিক তৃতীয় বিভাগ/সমমান গ্রহনযোগ্য হবে না।
প্রশ্ন উঠেছে, সনজিৎ কুমার বিশ্বাসের দুই টিতে তৃতীয় বিভাগ পাশ থাকলেও কিভাবে তাকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রধান শিক্ষক হিসেবে মনোনীত করেন।
অভিযোগ উঠেছে, তার এই কাগজপত্রে ত্রæটি থাকায় এমপিও ভূক্তি করতে যত বিপত্তি ঘটে। সে সময়ের শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার তাকে এমপিও ভূক্ত না করিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যান।
সূত্র জানায়, ২০২৪ সালে মনিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন আকরাম হোসেন। যোগাদানের পর ওই কর্মকর্তা আকরাম হোসেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণীর পাশ সনদে দ্বিতীয় শ্রেণী দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক সনজিৎ কুমার বিশ্বাসকে ২০২৪ সালে এমপিভুিক্ত করান। এ ঘটনা জানাজানির পর এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন মুঠো ফোনে বলেন, বদলীজনিত করনে বর্তমানে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার দায়িত্বে রয়েছি। মনিরামপুর একটি বড় উপজেলা। যে কারণে কোন প্রতিষ্টানে কোন শিক্ষক এমপিভুক্তি করা হয়েছিল সেটি মনে নেই। তবে, বিষয়টি নিয়ে খোজ নিয়ে দেখবো। যিনি নিয়োগ কালীন সময়ে দায়িত্বে ছিলেন তিনিই ভাল বলতে পারবেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সনজিৎ কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এদিকে, এলাকাবাসীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত রোববার মনিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এএসএম জিল্লুর রশীদ সরেজিমন হাটগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিষয়টি তদন্তে যান।
শিক্ষা কর্মকর্তা এএসএম জিল্লুর রশীদ বলেন, প্রধান শিক্ষক সনজিৎ কুমারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক। তবে, নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।