প্রতিনিধি 25 July 2025 , 12:30:40 প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, (যশোর):
যশোরের মনিরামপুরে বিএনপি কর্মী মেজবা উদ্দিন চন্টু হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুর মোহাম্মদ গাজী এবং মনোহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অমর কান্তি রায়। বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারা মিয়া।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিহত মেজবা উদ্দিন চন্টু কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক বিরোধের কারণে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়, যার ফলে তিনি নিরাপত্তার কথা ভেবে ঢাকা চলে যান।
২০১৫ সালের ১৭ মার্চ চন্টুকে চালক নয়নের মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় গিয়ে ধরে এনে যশোর ডিবি কার্যালয়ে আটকে রাখে পুলিশ। এরপর চন্টুর পরিবারের সদস্যরা আসামি জুয়েল ও হাশেম আলীর মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু আসামিরা বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
পরিবারের দাবি, তারা গোপন সূত্রে জানতে পারেন চন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ১৮ মার্চ চন্টুর স্বজনরা গরীবপুর শ্মশানঘাট এলাকায় গিয়ে দেখতে পান, আসামি নুরুন নবী গাছি দা দিয়ে চন্টুর পিঠে কোপ মারছেন এবং অন্য আসামিরা তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে, দুই চোখ উপড়ে ফেলে এবং পুরুষাঙ্গ কেটে নেয়। উপস্থিত লোকজন দেখতে পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরদিন ১৯ মার্চ স্থানীয়দের দেওয়া খবরে চন্টুর মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে শনাক্ত করে তার পরিবার।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আলী হোসেন ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও পাঁচজন এসআইসহ মোট ৩৮ জনকে আসামি করা হয়। আদালতের নির্দেশে মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসেবে থানায় রেকর্ড হয়।
মামলার তদন্তে আওয়ামী লীগের দুই নেতার সম্পৃক্ততা পাওয়ার পর পুলিশ বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করে।
তবে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবারের দাবি, এই গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের দাবি, চন্টু হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই এই মামলা ব্যবহার করা হচ্ছে।