মনিরামপুর যশোর প্রতিনিধি।।
বিল হরিনার ধসে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কারে শত শত গ্রামবাসি স্বেচ্চাশ্রমে কাজ করছেন। গত শনিবার গভীর রাতে যশোরের মনিরামপুরে বিল হরিনার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে আবাদকৃত প্রায় ১২শ' বিঘার বোরো তে এবং প্লাবিত হয়েছে মাছের ঘের। ধানের তে ও মাছের ঘের বাঁচাতে মাইকিং করে বাঁশ-খুটি ও ঝুড়ি-পালা নিয়ে শত শত গ্রামবাসি স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ সংস্কারে নেমেছেন। এদিকে খবর পেয়ে রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এসময় বেড়িবাঁধ সংস্কারে স্বেচ্ছাশ্রমীদের অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের সহগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়া দ্রুত বাঁধ নির্মানে সেখানে উপস্থিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
জানাযায়, শনিবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে আকস্মিক হরিণা খালের ২০-২৫ হাত বাঁধ ভেঙ্গে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এলাকায় মাইকিং করে নিজেদের উদ্যোগে শনিবার দিনভর চেষ্টা করে বাঁধ বেধে পানি আটকাতে ব্যর্থ হন। এতে করে সেখানে কোমর পানি জমেছে। পরদিনও চলছে একই চেষ্টা। তারপরও পানির তোড় থামছেই না
স্থানীয় ইউপি সদস্য দিপক কুমার বলেন, হরিনা বিলে বিমল ও আছাদের বিশাল আয়তনের দুটো মাছের ঘের রয়েছে। ঘের দুইটির মাঝখানে হরিণা খালের অবস্থান। খালের পাড় সরু হওয়ায় ঘের কেটে চওড়া করে পাড় বেধে তালের চারা রোপন করা হয়েছে।
দিপক মেম্বর বলেন, ঘের মালিকের সাথে চুক্তি অনুযায়ী বোরো মৌসুম আসলে ঘেরের পানি সেচে হরিণা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে খালে পানি ফেলা হয়। খালটি কেশবপুর উপজেলার গাইয়েখালি গেট হয়ে নদীর সাথে মিশেছে। এবার বোরো মৌসুম শুরুর আগে বিমলের ঘেরের পানি জমির মালিকরা নিজ খরচে সেচে ঘেরে বোরো আবাদ করেছে। আর ঘেরের মধ্যে সরু করে আর একটি ঘের কেটে সেখানে ঘেরের মাছ ধরে রেখেছেন ঘের মালিক বিমল। হরিনার খালের পানি গাইয়েখালি গেট দিয়ে না সরায় এখন খালে পানি টুইটম্বুর হয়ে আছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শনিবার রাত চারটার দিকে হঠাৎ হরিণা খালের পাড় ভেঙ্গে বিমলের ঘেরের মধ্যের অন্তত ১ হাজার ২০০ বিঘা বোরো আবাদে পানি ঢুকে পড়েছে। সকালে এলাকায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাবাসী এসে বাঁশ খুঁটি দিয়ে বাধ দেওয়ার চেষ্টা করে। পানির স্রোতের গতি বেশি হওযায় দিনভর চেষ্টা করে আমরা বাঁধ দিতে ব্যর্থ হয়েছি। এতে করে বিমলের ঘেরের ভিতরের ৯০০-১০০০ বিঘা বোরো আবাদ এখন কোমর পানিতে তলিয়ে আছে। রাতে পানি ঢুকে কোন পর্যন্ত তলিয়ে যায় সেটা নিয়ে এলাকার সবাই চিন্তিত। আর বিমলের ঘেরের মাছ পাশের যেই ঘেরে রাখা ছিল সেটাও প্লাবিত হয়ে অন্তত কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
ভুক্তোভূগি অসিম রায় বলেন, ভবদহ জলবদ্ধতার কারনে বর্ষা মৌসুমে ধান করতে পারি না। এখন পানি কমায় ধান চাষ করেছি তাও জলের নিচে চলে গেলো। এখন আমরা কিভাবে সংসার চালাবো সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।
জানাতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, বিলের ভাংঙ্গন অংশ পরিদর্শন করেছি। বাঁধ নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা প্রাদান করা হবে। অপর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষকের তালিকা করে পর্যায়ক্রমে তাদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রয়োজীয় ব্যবস্থার আশ্বাস প্রদান করেন।