নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-
ঝিনাইদহের শৈলকুপার কাঁঠাল চাষি ও ব্যবসায়ীদের মুখে এখন চওড়া হাসি। মাত্র পনেরো দিন আগেও যে কাঁঠাল নিয়ে তাদের মনমরা অবস্থা ছিল, সে কাঁঠালই এখন ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। মন্দা কাটিয়ে কাঁঠালের বাজার এখন তেজি, আর এর সুফল সরাসরি পাচ্ছেন উৎপাদকরা।
দামের ঊর্ধ্বগতি: এক নতুন চিত্র
আজ থেকে ১৫ দিন আগেও শৈলকুপা হাটে মাঝারি আকারের একটি কাঁঠাল বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩০-৪০ টাকায়। এই অবিশ্বাস্য কম দামের কারণে চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু গতকাল শনিবার সেই একই মাপের কাঁঠাল বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়! অর্থাৎ, প্রতি কাঁঠালে দাম বেড়েছে ৫০-৬০ টাকা। বড় আকারের কাঁঠালগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকায়, যা আগে হয়তো কল্পনাও করা যেত না।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া থেকে আসা ব্যবসায়ী নুর মুহাম্মদ জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা। ১৫ দিন আগেও তিনি ১০০ কাঁঠাল কিনেছিলেন ১০ হাজার টাকায়, অথচ শনিবার একই ১০০ কাঁঠালের জন্য তাকে গুনতে হয়েছে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। আরেক ব্যবসায়ী হেলাল গাজীর অভিজ্ঞতাও একই রকম; ১৫ দিন আগে ১২ হাজার টাকায় কেনা ১০০ কাঁঠাল এখন কিনতে হচ্ছে ১৬ হাজার টাকায়।
শৈলকুপার পরিচিতি ও হাটের প্রাণচাঞ্চল্য
শৈলকুপা দেশের অন্যতম কাঁঠাল উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত। শনি ও মঙ্গলবার এখানে কাঁঠালের হাট বসে, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শুধু ঝিনাইদহ নয়, পাশের কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ী জেলার অনেক বিক্রেতাও তাদের কাঁঠাল নিয়ে এই হাটে আসেন। প্রতি হাটে এখান থেকে সাত-আট ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, যেমন পটুয়াখালী, বরিশাল, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায় যায়।
হাটের ইজারাদার তোফাজ্জেল হোসেনও কাঁঠালের এই ঊর্ধ্বমুখী বাজার দেখে খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফজ্জামান বলেন, শৈলকুপা উঁচু এলাকা হওয়ায় কাঁঠাল উৎপাদনে এটি দেশের মধ্যে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। আমের মৌসুমে কাঁঠালের দাম কিছুটা কম থাকলেও, এখন চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় চাষিরা সত্যিই উপকৃত হচ্ছেন।
সব মিলিয়ে, শৈলকুপার কাঁঠাল এখন কেবল ফল নয়, এটি এখন এলাকার চাষি ও ব্যবসায়ীদের জন্য সমৃদ্ধির প্রতীক।