অন্যান্য

মহেশখালীতে ব্রি ধান-৯০ (সুগন্ধি ও চিকন) জাতের বাম্পার ফলন–

  প্রতিনিধি 7 November 2024 , 5:43:55 প্রিন্ট সংস্করণ

সুমন চন্দ্র দে, মহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:

 

কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে চলতি মৌসুমে মাঠে কৃষক পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ধান ব্রি-৯০। মাত্র ৩৩ শতক জমিতে চাষ করা উচ্চফলনশীল আধুনিক জাতের এ সুগন্ধি ও চিকন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে মহেশখালীর হোয়ানক এলাকায়।

 

সরজমিনে দেখা যায় এ ধান দেখতে যেমন চিকন ও সুন্দর, তেমনি সুগন্ধি হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অন্যদিকে এ জাতের ধান কম বয়সে পরিপক্ব হওয়ায়ও কৃষকেরাও খুশি। বর্তমানে ওই এলাকায় স্থানীয় ধানের মাঠে কেবল পুষ্পায়ন হচ্ছে। ধান রোপণ করার মাত্র ১২২ দিনের কম সময়ে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায়, এ জাতের ধান নিয়ে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

 

যেসব জমি মাঝারি উঁচু বা উঁচু, এ ধান চাষ করে, ধান কাটার পর সেখানে সরিষা, আলু, শাক-সবজির চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।

 

সাধারণত এ এলাকায় স্থানীয় জাতের আমন ধান অনেক দেরিতে পাকে। যে কারণে নতুন কোনো ফসল চাষ করা সম্ভব হয় না। ফলে এলাকার বেশির ভাগ জমি এক ফসলি হওয়ায়, প্রায় সময় ফাঁকা পড়ে থাকে। ব্রি-৯০ একদিকে মাত্র চার মাসের মধ্যেই পাকে এবং ফলনও বেশি। স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছে, অন্য জাতের ধান হেক্টরপ্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদন সাড়ে তিন থেকে চার টন। সেখানে ব্রি ধানের উৎপাদন পাঁচ টন পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব।

 

উপজেলা কৃষি অফিস হতে, কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় মহেশখালী’র হোয়ানক ইউনিয়নের বড় ছড়া গ্রামের কৃষক মোঃ হাবিব উল্লাহর কাছে বিনা মূল্যে ব্রি-ধান ৯০ বীজ দেওয়া হয়। এবারই প্রথম এ জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পান মোঃ হাবিব উল্লাহ। তাঁর জমিতে ধান পাকার পর ফলন দেখে, অনেকেরই এ ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে। কৃষক মোঃ হাবিব উল্লাহ বলেন, মাত্র ৩৩ শতক জমিতে এতো ফলন পাওয়ায় তিনি খুবই খুশি।

 

সরজমিনে কৃষকের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকেরা এটি দেখে ব্রি ধান-৯০ চাষে মনোযোগী হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে পুরো মহেশখালী উপজেলায় এর চাষাবাদ বিস্তৃত হবে।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ ধানের চাল বিদেশে রপ্তানিযোগ্য। কেবল এই এলাকাতেই নয়, সারা দেশে আগাম আমন ধান হিসেবে ব্রি-৯০ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, এবং কৃষকেরা চাষাবাদ করে যাচ্ছেন।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রণোদনা সহায়তা দিয়ে থাকে। আমরা বিনামূল্যে বীজ, সার ও নগদ অর্থ সহ প্রদান সহ কারিগরি সহায়তা এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। তাঁরই দৃষ্টান্ত উদাহরণ হোয়ানকের কৃষক মোঃ হাবিব উল্লাহ।

 

হোয়ানক ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সাগর বলেন, রোপা আমন মৌসুমে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের আওতায় হোয়ানক বড় ছড়া গ্রামের কৃষক মোঃ হাবিব উল্লাহ কে ব্রি ধান-৯০ (সুগন্ধি চিকন) ধানের প্রদর্শনী দেওয়ার হয়। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আমি নিয়মিত মাঠ তদারকির মাধ্যমে চিকন ও সুগন্ধিযুক্ত এ চালের বাম্পার হয়েছে। আশা করি, আগামী মৌসুমে আমার এই হোয়ানক ব্লকে আরো ব্যাপক চাষাবাদ হবে।

 

লুমিনাস মিরাকেল এগ্রো লিমিটেড এর মহেশখালী উপজেলার ফিল্ড ইনচার্জ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইশরাত মুহাম্মদ শাহ জাহান বলেন, চলতি মৌসুমে ব্রি-৯০ ধানের এ চাষাবাদে কৃষক হাবিব উল্লাহ’র বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের মিরাকেল গ্রোথ (মাটির অনুখাদ্য) ব্যবহারে কৃষকদের একদিক দিয়ে সার ও কীটনাশক এর খরচ কম হচ্ছে, অন্য দিকে জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত মিরাকেল গ্রোথ ব্যবহারে মাটির পুষ্টি গুনগান ধরে রাখা সহ ব্যাপক ফলস হচ্ছে।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ