প্রতিনিধি 29 July 2025 , 5:10:41 প্রিন্ট সংস্করণ
ঝিনাইদহ, ২৯ জুলাই ২০২৫:
মহেশপুর সীমান্ত এলাকা যেন অস্ত্রের খোলা বাজার! মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি চারটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ানশ্যুটার গান এবং বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করেছে। তবে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের মালিক বা কোনো সন্ত্রাসীকেই আটক করতে পারেনি বিজিবি। এতে সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
একের পর এক অস্ত্র উদ্ধার, কিন্তু অপরাধীরা উধাও
১৭ জুলাই: মহেশপুর উপজেলার জলুলী গ্রামের রিপন বিশ্বাসের ড্রাগন বাগানের পাশে একটি মোটরসাইকেলকে চ্যালেঞ্জ করে মাঠিলা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার শরীফ মনিরুজ্জামান। এসময় কাজিরবেড় ইউনিয়নের জীবননগর পাড়ার সন্ত্রাসী লিটন মিয়া ওরফে পিচ্চি লিটন ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ওয়ানশ্যুটার গান ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।
২২ জুলাই: রাতে মহেশপুরের সামন্তা সীমান্তের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের একটি পাটক্ষেতের পাশ থেকে সামন্তা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মুন্সী এমদাদুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। তবে অস্ত্রের মালিক কে, তা এখনও জানা যায়নি।
২৩ জুলাই: ভোরে মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সদস্যরা সীমান্ত এলাকার একটি ইটভাটার পাশ থেকে আরও ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। সহকারী পরিচালক মুন্সী এমদাদুর রহমান জানান, নতুন পাড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা গোয়ালপাড়া গ্রামের জোকা মোল্লার ইটভাটার পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এগুলো উদ্ধার করে। এ ক্ষেত্রেও অস্ত্রের মালিকের সন্ধান পাননি বিজিবির সদস্যরা।
কেন অধরা থাকছে সন্ত্রাসীরা? আতঙ্কে সীমান্তবাসী
মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় মহেশপুরসহ পুরো সীমান্ত এলাকার মানুষ চরম উদ্বিগ্ন। তাদের প্রধান প্রশ্ন, কেন এত অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে, অথচ কোনো সন্ত্রাসী বা অস্ত্রের মূল মালিক আটক হচ্ছে না? এই প্রশ্নই মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলেছে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই অস্ত্রগুলো হয়তো বড় কোনো অপরাধী চক্রের হাতে রয়েছে এবং যেকোনো সময় সেগুলো ব্যবহার হতে পারে। সন্ত্রাসী ও অস্ত্রের কারবারিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় জনমনে নিরাপত্তা নিয়ে গভীর সংশয় তৈরি হয়েছে। বিজিবিকে আরও সক্রিয় হয়ে এই অস্ত্র কারবারিদের মূল উৎপাটনের দাবি জানিয়েছে সীমান্তবাসী।