প্রতিনিধি 4 May 2025 , 5:58:49 প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ ইকরামুল হাসান
মাগুরা জেলার শ্রীপুরে এক ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। নোহাটা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর বিরুদ্ধে উঠেছে চতুর্থ শ্রেণির এক নিষ্পাপ স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির গুরুতর অভিযোগ। এই ঘৃণ্য ঘটনায় স্থানীয় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলস্বরূপ অভিযুক্ত শিক্ষকের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছেন সাধারণ মানুষ।
রবিবার (৪ মে) শ্রীপুরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। সকালের দিকে শ্রীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে তাদের ধিক্কার জানায়। এরপর দুপুরে সব্দালপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সব্দালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তারা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রেশ কাটতে না কাটতেই একই ইউনিয়নে ফের এমন জঘন্য ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে লম্পট শিক্ষক টিটোকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
ক্ষুব্ধ স্কুলছাত্র তানভীর ক্ষোভের সাথে বলে, “নোহাটা উত্তরপাড়া স্কুলের শিক্ষক টিটো আমাদের এক বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। আমরা এর justice চাই!”
আরেক শিক্ষার্থী সাকিল মোল্লা বলে, “আছিয়া আপুকে তো আমরা হারিয়েছি ধর্ষকের হাতে। এবার শুনি টিটো স্যার নাকি আরেকজনের সাথে একই কাজ করার চেষ্টা করেছে। শুধু তাই না, তাকে নাকি টাকা দিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে খারাপ কাজ করতে চেয়েছিল। আমরা এর শেষ দেখতে চাই।”
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে মোঃ আল মামুন নামের এক ব্যক্তি বলেন, “আছিয়ার কান্না আমরা এখনো ভুলতে পারিনি, এর মধ্যেই আবার শিক্ষকের এই নোংরামি! স্কুলে যদি আমাদের বাচ্চাদের নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে আমরা কোথায় যাব? এই কুলাঙ্গার শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
স্থানীয় অভিভাবক মোঃ হামিম আক্ষেপ করে বলেন, “মাগুরার হিটু শেখের পর এবার এই টিটো! এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক। আমাদের বিচার ব্যবস্থা যদি একটু কড়া হতো, তাহলে হয়তো এমন ঘটনা বারবার ঘটত না।”
নির্যাতিত শিশুর চাচা এবং মা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটো বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মেয়ে ও তার সহপাঠীকে উত্ত্যক্ত করছিল। গত ৩০শে এপ্রিল, বুধবার, টিটোর ক্লাস চলাকালীন সময়ে তাদের মেয়ে বাথরুমে গেলে টিটো সেখানে ঢুকে তার মুখ চেপে ধরে এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। শিশুটি বাধা দিলে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। কোনোমতে classroom-এ ফিরে এসে সে তার মাকে সব জানায়।
শিশুটির মা আরও বলেন, “ঘটনা জানার পর আমি আমার দেবরের সাথে থানায় যাই এবং তিনি বাদী হয়ে টিটোর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছে এবং ২ মে রাতে মামলা নিয়েছে। আমরা এই চরিত্রহীন শিক্ষকের কঠিন শাস্তি চাই।” নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং- ০৩, তারিখ- ০২-০৫-২০২৫) দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।