প্রতিনিধি 17 August 2025 , 11:18:08 প্রিন্ট সংস্করণ
ফয়সাল হায়দার, স্টাফ রিপোর্টার।
মাগুরা সদর উপজেলার আলাইপুর গ্রামে মাত্র সাত হাজার টাকার চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে সজল মোল্লা (১৭) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, এ ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
গত রবিবার (১০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সজলের মৃত্যু হয়। নিহত সজল মাগুরা সদর উপজেলার আলাইপুর পূর্বপাড়া গ্রামের শরিয়ত মোল্লার ছেলে।
সকালে অভিযোগ, বিকেলে আটক, রাতে মৃত্যু
নিহতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলী জানান, রবিবার সকালে খবির মুন্সি, তার ছেলে ও ভাতিজারা সজলের বিরুদ্ধে সাত হাজার টাকা চুরির অভিযোগ তোলে। প্রথমে তারা তাকে ধরার চেষ্টা করলেও পারেনি। পরে বিকেল ৫টার দিকে আলাইপুর কালিতলা এলাকা থেকে সজলকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তার উপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়।
প্রচণ্ড মারধরের ফলে সজলের শারীরিক অবস্থা গুরুতরভাবে অবনতি ঘটে। পরে রাত ১০টার দিকে অভিযুক্তরা তাকে মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। তবে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে থাকা খবির মুন্সি দাবি করেন, সজল তার বাড়ি থেকে সাত হাজার টাকা চুরি করেছিল। তবে এ বিষয়ে নিহতের পরিবার অভিযোগ করে বলছে, চুরির কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী বলেন,
“চুরির অভিযোগে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত কারো নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এলাকায় উত্তেজনা, পরিবারের কান্না ঘটনার পর থেকে আলাইপুর গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহতের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে। তারা অভিযোগ করে বলছে, সজলকে নির্দোষ হয়েও হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত বিচার ও দোষীদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে অভিযোগ তুলে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ন্যক্কারজনক। পুলিশ যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এলাকায় উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।