মাগুরার মহম্মদ পুর সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে।কৃষকের মূখে হাসি ফুটে উঠেছে। চারদিকে মৌ মৌ ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছে। আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছি ও ছোট পাখির গুঞ্জনে মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এবং সরিষা ক্ষেতে দর্শনার্থীদের ভীড় বেড়েছে।
২০ শে জানুয়ারী রোজ সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ও জানা যায়, মাগুরার মহম্মদ পুর উপজেলায় বিগত বছর সরিষার ভাল ফলন হওয়ায় এবারও কম খরছে বেশী ফলন এর আশায় চাষীরা আমনধান গোলায় তুলে এমনকি পথিত জমিতে হেমন্তের শেষের দিকে সরিষার বীজ বপন করেছিলেন। বাম্পার ফলনও হয়েছে। কৃষক -কৃষাণীর মূখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।জমি পরিচর্যায় ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন। কিছু দিন পর এই শষ্য ঘরে তুলতে পারবেন। তাদের এই আশার ফসল সরিষার গাছ এর সবুজের ডগায় ডগায় হলুদ রঙ এর ফুল ফুটেছে।গাছে গাছে মন মাতানো সরিষা ফুল মৃদু হাওয়ায় দুলছে। গাঢ় হলুদ বর্ণের এই ফুলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছি আর ছোট পাখির গুঞ্জনে মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। দুর থেকে মনে হয় প্রকৃতি প্রেমী কোনোজন সবুজ শ্যামলের মাঠে হলুদের চাদর বিছিয়ে রেখেছে। মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত প্রকৃতিতে অন্যমাত্রা এনে দিয়েছে।এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখতে আর সরষে ফুলের ঘ্রাণ নিতে প্রকৃতি প্রেমী লোকজন সরষে ক্ষেতে প্রতিনিয়ত ভীর করার পাশা-পাশি ছবি তলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এবিষয়ে সরষে চাষী রফিক মিয়া, আঙ্গুর মিয়া, আজব আলী, ও সিদ্দিক একান্ত আলাপকালে তাদের অভিপ্রায় ব্যাক্ত করতে গিয়ে বলেন, গত বছর সরিষার ভাল ফলন হয়েছে। তাই এবারও সরিষার চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনায় ভাল বীজ ও সার পেয়েছি। কৃষি কর্মকর্তাগণ আমাদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে আমাদেরকে হাতে কলমে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। এবং সব সময় আছেন। যেভাবে জমিতে সরিষা ফল ফুটেছে আমরা আশাবাদী বাম্পার ফলন হবে। কেননা গত বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া অনূকূলে রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, দুর্দান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষ অর্থাৎ পরিবার এর লোকজন নিয়ে সরিষা ক্ষেতে প্রতিনিয়ত আসছেন। এই সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি ফটো তুলে চলে যাচ্ছেন। এতে আমাদের ভাল লাগছে।
সরিষা ক্ষেতে আগত দর্শনার্থী জাহেদুজ্জামান শুয়েব ও ফয়সল আহমেদ তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ছয় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ,সবসময়ই অপরূপ। ফুল-ফলের রূপসী বাংলা প্রকৃতির সাজে সাজার পাশা-পাশি আমাদের নানা প্রয়োজন মেঠায়। চলতি শীত মৌসুমে মাঠে মাঠে সবুজের ডগায় সরষে ফুলের সমারোহ আর মৌ মৌ ঘ্রাণ আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছি এবং পাখির গুঞ্জনে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ এর সৃষ্টি হয়েছে। ফুলের সৌন্দর্য্য আর সুবাস নিতে সরষে ক্ষেতে এসেছি। এই সময়টুকু প্রেমবন্দী করে রাখতে ছবিও তুলেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, সরিষা একটি লাভবান ফসল। কম খরচে বেশী লাভবান হওয়া যায়। তাই বেশী বেশী সরিষা চাষাবাদ প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে হমম্মদ পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরষে একটি লাভজনক ফসল। গত বছর এই উপজেলায় ২ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছিল। ফলন ভাল হওয়ায় এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩ শত ৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। ফলনও ভাল হয়েছে। কিছু দিন এর মধ্যে কৃষকেরা ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এক কেদার জমিতে ৩ থেকে ৪ মণ সরিষা পাওয়া যাবে। এবং এক কেজি সরিষা থেকে ৩৫০ গ্রাম থেকে ৪০০ গ্রাম তৈল পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, সরকারি ভাবে কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এবং সার্বক্ষণিক মাঠে ময়দানে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।