অন্যান্য

মাগুরা শালিখায় নিষ্টুর স্বামীর শাবলে’র আঘাতে স্ত্রী খুন

  প্রতিনিধি 13 July 2025 , 12:20:28 প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃইকারামুল হাসান ক্রাইম রিপোর্টার মাগুরা

মাগুরার শালিখা উপজেলায় হরিশপুর গ্রামে ঘরের ভিতর থেকে গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে শালিখা থানা পুলিশ।

শনিবার ১২ জুলাই সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার হরিশপুর গ্রামের মিজানুর মোল্যার স্ত্রীর সোনালী বেগমের(৩৮) লাশ নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মাগুরা শালিখায় শাবলের আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু, পালিয়েছেন স্বামী, মাগুরা শালিখায় পারিবারিক কলহের জেরে শাবলের আঘাতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামে স্বামী মিজানুর মোল্লা (৪০) এই হত্যা করেন। হত্যার শিকার সোনালী খাতুন (৩৮) উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দাড়া গ্রামের লতিফ মন্ডলের মেয়ে। বিশ বছর আগে একই উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের মিজানুর মোল্লার সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২০ বছর বয়সের ছেলে ও ১১ বছর বয়সের কন্যা সন্তান আছে।
পুলিশ সোনালী খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে।এ হত্যার ঘটনায় সোনালী খাতুনের পরিবার শালিখা থানায় মামলা করবে।

সোনালীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে নানা অজুহাতে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ২০২১ সালে স্বামীকে, ২০২৩ সালে তার ছেলেকে বাবার বাড়ি ও বিভিন্ন এনজিও টাকা নিয়ে সৌদি আরবে পাঠায়। দুই বছর না যেতেই দুজনই আবার দেশে ফিরে আসেন। বিদেশ থেকে ফিরে এসে তার স্বামী মিজানুর মোল্লা চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেন। শুক্রবার রাত আটটার দিকে স্বামী মিজানুর মোল্লা চট্টগ্রাম থেকে তার স্ত্রী সোনালী খাতুনকে ফোন করেন কিন্তু স্ত্রী ফোন রিসিভ করতে একটু দেরি হয়, পরে রাত নয়টার দিকে স্ত্রী তার স্বামী মিজানুর মোল্লা কে ফোন দেন তখন স্বামী ফোন রিসিভ করেন নাই। পরে স্বামী মিজানুর রহমান চট্টগ্রাম থেকে সকাল সাড়ে ৬ টায় বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে স্ত্রীকে ডাকাডাকি করেন স্ত্রী ভয়ে ঘরের দরজা খোলে নাই। একপর্যায়ে স্বামী মিজানুর মোল্লা ঘরের ওয়াল টপকে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন একপর্যায়ে ঘরের ভিতরে থাকা শাবল দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন। তখন স্ত্রী সোনালী খাতুন ঘরের মেঝে লুটিয়ে পড়েন। ঘরে থাকা তার মেয়ে মদিনার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তিনি পালিয়ে যান। পরে প্রতিবেশীরা দেখতে পান সোনালীর রক্তাক্ত দেহ ঘরের মেঝে পড়ে আছে। এদিকে খবর পেয়ে শালিখা থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মাগুরার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবেশী জুয়েল জানান, ভোর সকালে আমার কাকা মিজানুরকে দেখি বাড়ীর সিড়ির উপর বসে আছে। কাকা ঘরে ডুকবে কাকি (সোনালী) ঘর খুলছে না।

আমি কাকাকে বল্লাম বকা-বকির দরকার নেই। তাই বলে আমি কাজে চলে যাচ্ছিলাম, বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তা পর্যন্ত গেলে চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনে বাড়ী আসলে কাকাতো বোন মদিনা বলে আব্বা মাকে মেরে ফেলেছে।

সোনালী বেগমের মেয়ে মদিনা খাতুন (১১) জানান, আব্বা মাকে মেরে ফেলেছে। আরো বলেন আব্বা চট্রগ্রামে রডের কাজ করে আজ ভোর সকালে আব্বা বাড়ী আসে। আব্বা মাকে ঘর খুলতে বললে মা বলে আমার মাকে খবর দাও তার সামনে ঘর খুলবো,, না হলে তুমি আমাকে মারবে। মা ঘর না খুললে আব্বা রান্না ঘরের দেওয়ালের উপরে বাঁশের বেড়া ভেঙ্গে ঘরে ডুকে রডের শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে মার মাথায় রডের শাবল দিয়ে বারি দিয়েছে। আমার আব্বা মাকে মেরে ফেলেছে।

শালিখা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ ওলি মিয়া জানান, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী মিজানুর মোল্যা শিশু সন্তান মদিনার সামনে সোনালী বেগমকে রড দিয়ে মাথায় বারি দিয়ে মেরেছে ফেলেছে। সোনালী খাতুন হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত মিজানুর মোল্লাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ