স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ সাদেকুল
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সোয়াবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সারাবছরই পানি জমে থাকে। সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে হাঁটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো এসেম্বলি করতে পারছে না, খেলাধুলা তো দূরের কথা—ক্লাসের স্বাভাবিক পরিবেশও ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিদিন ভেজা মাঠে দাঁড়িয়ে এসেম্বলি করতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী পিছলে পড়ে আহত হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শৌচাগারও ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।
জলাবদ্ধতার নেপথ্যে খাস জমি দখলবাজি
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের একটি ফাইভ (নালা) ছিল। কিন্তু সোয়াবই গ্রামের প্রভাবশালী মইদর আলীর ছেলে বাবুল মিয়া ও খোকন মিয়া সরকারি খাস জমি দখল করে মাটি ভরাট করে সেই ফাইল বন্ধ করে দিয়েছেন। পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আখতার উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন,
“বাবুল মিয়া ও খোকন মিয়া সরকারি খাস জমি দখল করে মাটি ভরাট করে রাখার কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে স্কুল প্রাঙ্গণে সবসময় পানি জমে থাকে, শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো এসেম্বলি বা খেলাধুলা করতে পারে না।”
প্রধান শিক্ষক ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
মাধবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে এবং দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাসেম বলেন,
“বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
গ্রামবাসী জানান, একদিকে শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে খাস জমি দখল করে জনস্বার্থের ক্ষতি করা হচ্ছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ না হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অভিযুক্ত বাবুল মিয়া ও খোকন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি দখল করে রেখেছেন।