অন্যান্য

মুইজ্জুকে উৎখাতে ‘নীলনকশা’ করেছিল ভারত: ওয়াশিংটন পোস্ট

  প্রতিনিধি 1 January 2025 , 3:24:55 প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

 

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে দেশটির বিরোধীদের নিয়ে ‘নীলনকশা’ তৈরি করেছিল ভারত। বিষয়টির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

 

ওয়াশিংটনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনপন্থী মুইজ্জু মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ভারতের বলয় থেকে বেরিয়ে চীনের সঙ্গে কূটনীতি সম্পর্ক বাড়ানোয় তৎপর হয়ে ওঠেন। এমনটি মালদ্বীপের থাকা ভারতীয় সেনাদের ফিরিয়ে নিতে ভারত সরকারতে সময়সীমাও বেঁধে দিনি তিনি। এ ছাড়া বেইজিংয়ের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতামূলক চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে তোড়জোর শুরু করেন।

 

এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে সরিয়ে দিতে মালদ্বীপের বিরোধী নেতাদের সঙ্গে গোপনে আলোচনা শুরু করেন ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)–এর পক্ষে কাজ করা এজেন্টরা। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তারা একটি ‘নীলনকশা’ সাজিয়ে ফেলেন। ওই আলোচনায় অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের নাম প্রকাশ করেনি।

 

 

২০২৩ সালের শেষের দিকে ক্ষমতায় বসা মুইজ্জু ভারতের আধিপত্যবাদী পররাষ্ট্রনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ান। তিনি ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন।

 

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, সম্প্রতি তাদের হাতে ‘ডেমোক্রেটিক রিনিউয়াল ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক একটি অভ্যন্তরীণ গোপন নথি এসেছে। নথিতে দেখা গেছে, মালদ্বীপের বিরোধী রাজনীতিকেরা মুইজ্জুর নিজ দলের সদস্যসহ ৪০ আইনপ্রণেতাকে ঘুষ দিয়ে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া মুইজ্জুর উৎখাত নিশ্চিত করতে ১০ জন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং তিনটি প্রভাবশালী অপরাধী চক্রকে অর্থ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। বিভিন্ন পক্ষকে ঘুষ দেয়ার জন্য র–এর এজেন্টরা ৮ কোটি ৭০ লাখ মালদ্বীপি রুপিয়া (প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলার) সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছিল। মালদ্বীপের দুজন সরকারি কর্মকর্তার মতে, এই অর্থ ভারতের কাছ থেকে সংগ্রহের পরিকল্পনা ছিল।

 

 

তবে শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রকারীরা মুইজ্জুকে অভিশংসনের জন্য যথেষ্ট সমর্থন জোরদারে ব্যর্থ হন। মুইজ্জুকে উৎখাতের এই পরিকল্পনায় অর্থের জোগান দিতে ভারত শেষ পর্যন্ত আর এগোয়নি।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুইজ্জুকে অপসারণের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলেও এই ঘটনা এবং এর পটভূমি ভারতের সঙ্গে চীনের একটি বৃহত্তর, ছায়া প্রতিযোগিতার একটি বিরল দৃষ্টান্ত তুলে ধরে। এশিয়ার কৌশলগত এলাকাগুলোতে এবং এর আশপাশের জলসীমায় প্রভাব বিস্তারের যে তীব্র প্রতিযোগিতা বেইজিং ও নয়াদিল্লির মধ্যে চলছে সেটি এই ঘটনায় আরও স্পষ্ট।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ