যশোরের কেশবপুর উপজেলার যশোর -সাতক্ষীরার ব্যাস্ততম সড়কের মধ্যকুল আমতলা,গুটলেতলা নামক স্হানে প্রায় শতাধিক পরিবার ঝুপড়ি ঘর বেঁধে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।কেশবপুর উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যকুল হাবাসপোলের অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠে ও ঘরে ঢুকতে শুরু করে, তখন মেইন রোডের দুই পাশের বাসিন্দারা নিজেদের এবং গৃহপালিত পশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখা শুরু করেন। তখনই তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে উঠে পড়েন পাশের মেইন রোডের ওপর। ওই রোডের দুই পাশে অস্থায়ী ছাউনি বা ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে প্রায় শতাধিক পরিবার এখনো বসবাস করছে।কোনো কোনো পরিবার দুই সপ্তাহ কিংবা তারও বেশিদিন ধরে অবস্থান নিয়েছে মেইন রোডের পাশে। তারা এখন প্রহর গুনছে, কখন বাড়িঘর থেকে বন্যার পানি নামবে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে অনেকের ঘরে এখনও পানি। একরাণে অস্থায়ী একটি ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে সেখানে পরিবারের লোকজন নিয়ে বসবাস করছেন গত দুই/তিন সপ্তাহ ধরে। জাহানারা বেগম নামে এক মহিলা পুরোনো বসতঘরের চিত্র দেখিয়ে দৈনিক খুলনাঞ্চল প্রতিনিধিকে বলেন, ঘরের ভেতর এখনও পানি। তিন সপ্তাহ আগে বন্যার পানি উঠেছে। কিন্তু এখনও নামেনি। হুট করে বন্যার পানি যখন উঠেছে, তখন সামান্য কিছু মালামাল সরাতে পেরেছি। অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন রোডের ওপর আশ্রয় নিয়েছি।আশ্রয় নেওয়া আরেকজন মহিলা কুলছুম বেগম দৈনিক খুলনাঞ্চল প্রতিনিধিকে বলেন, বন্যার পানি খুব দ্রুত আমাদের ঘরে উঠানে ঢুকে পড়ে। খাটের কাছাকাছি পর্যন্ত পানি উঠে পড়ে। তখন তো আর ঘরে থাকার সুযোগ নেই। তাই গভীর রাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল কাঁথা-বালিশ যা যা কিছু ছিল সব নিয়ে বাড়ির পাশে মেইন রোডে ওপর উঠে আসি। ঘরের কিছু মালামাল টেবিলের ওপর রেখে দিয়েছি। ঘরে এখনও খাট সমান পানি। রোডের ওপর আশ্রয় নেওয়া রহিমা নামে আরও এক মহিলা বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ঘরের মধ্যে পানি। রোডের ওপর ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। এখনও ঘরে হাঁটু পরিমাণ পানি। কবে ঘরে ফিরতে পারবো- সে নিশ্চয়তা নেই।
এই রোডে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি। হাই স্প্রীডে পরিবহন সহ আরও অনেক গাড়ি চলছে। এই জায়গায় যদি গাড়ি গুলি একটু গতি কমিয়ে যাতায়াত করে তাহলে শিশুদের জন্য ঝুঁকি কম থাকে।
তিনি জানান, আমাদের মতো অন্তত প্রায় শতাধিক পরিবার এ রোডে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে থাকতেছে। আমরা ঘরবাড়ি রেখে রোডের ওপর উঠলেও আশ্রয় কেন্দ্রে যাইনি। আমাদের অনেকের গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি আছে। এগুলো রেখে কোথায় যাব? বাড়িঘরও দেখাশোনা করা লাগে। তাই বাড়ির পাশের রোডই আমাদের আশ্রয়স্থল।
তিনি আরও জানান, প্রায় শতাধিক পরিবারে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ আশ্রয় নিয়েছে রোডের ওপর। অনেকের গরু আছে কোনো এক উঁচু স্হানে। অনেকের খড়ের গাদা বন্যার পানিতে পচে যাওয়ায় গো-খাদ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে গৃহস্থরা।