প্রতিনিধি 25 August 2025 , 11:39:42 প্রিন্ট সংস্করণ
যশোর প্রতিনিধি
যশোরের দুটি আসনের সীমানা পরিবর্তনের শুনানিতে হাজির হননি আবেদনকারী বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল। এমনকি তার পক্ষে কেউ শুনানিতে অংশ নেননি। আইন অনুসারে ওই আবেদন খারিজ হবে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। একই শুনানিতে বসুন্দিয়া ইউনিয়নকে সম্পূর্ণভাবে যশোর সদর উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত করার আবেদনের পক্ষে ও বিপক্ষে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন অডিটোরিয়ামে এ শুনানি শুরু হয়। প্রথমে সাতক্ষীরার দুটি আসন ও পরবর্তীতে যশোরের দুটি আসনের শুনানি গ্রহণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম নাসির উদ্দিন নিজেই। এসময় নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সচিবালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুনানিতে আবেদনকারী বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল নিজেই ছিলেন অনুপস্থিত। তবে আবেদনের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। এছাড়া অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল, কেশবপুর বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ উপস্থিত ছিলেন। এরপর যশোরের বসুন্দিয়া ইউনিয়নকে যশোর সদরে অন্তর্ভুক্তিকরণের আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। কিন্তু এ আবেদনকারী বসুন্দিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান নিজেও ছিলেন অনুপস্থিত। তবে তার পক্ষে একজন অংশ নেন। তিনি দাবি করেন। এসময় তার এ দাবির বিপক্ষে অবস্থান নেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নূরে আলম সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবেদনকারী সুকৃতি কুমার মণ্ডল কিংবা তার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু কেউই কথা বলেননি। তবে তার আবেদনের বিপক্ষে অনেকেই অবস্থান নেন। তারা বর্তমান অবস্থায় সীমানা রাখার পক্ষে বিভিন্ন যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেন। বিষয়টি আমলে নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এক পর্যায়ে আবেদন খারিজ হবে এটাই স্বাভাবিক। এছাড়া, বসুন্দিয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি নির্বাচন কমিশন বলে দাবি করেন জানান।
এ বিষয়ে নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ বলেন, বসুন্দিয়া ইউনিয়নকে সদরের সাথে একত্রিতকরণের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি উপস্থিত থেকে জোর আপত্তি তোলেন। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেন, বসুন্দিয়া হচ্ছে দুটি আসনের মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করে। সীমানাগতভাবে অবস্থান যেভাবে রয়েছে সেভাবেই থাকলেই সকলের জন্য উপকার। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানালে তারা এ দাবি লিপিবদ্ধ করেন। একইসাথে ভবদহ বিষয়েও ওই শুনানিতে আলোচনা করা হয়। সেক্ষেত্রে তিনি দাবি করেছেন, উন্নয়নের স্বার্থে ভবদহ অঞ্চলটুকুই শুধুমাত্র যেকোনো একটি আসনে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। গোটা আসন ঢেলে সাজানোর কোনো প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কমিশন সে বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন। তবে, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানান।
শুনানি অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান খান, গোলাম রেজা দুলু, লোকসমাজের প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিতসহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর যশোর-৩ ও যশোর-৬ আসনের সীমানা পরিবর্তনের লিখিত আবেদন করেন। এছাড়া পুরো বসুন্দিয়া ইউনিয়নকে যশোর সদরেঅন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন জানানো হয়। এ আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে সোমবার নির্বাচন কমিশনের সামনে হাজির হন শতশত মানুষ। তারা মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। দুটি আসনের সীমানা পরিবর্তনের আবেদনের দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।