প্রতিনিধি 20 June 2025 , 7:43:25 প্রিন্ট সংস্করণ
➤ কৃত্রিম সংকট না বাজার সিন্ডিকেট ? ➤ মাস্কের দাম দ্বিগুণ ➤ স্যানিটাইজার নেই বাজারে ➤ কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ ➤ প্রশাসনের নজরদারি নেই
প্রশাসনের নজরদারির অভাবে দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
করোনার নতুন ঢেউয়ে আতঙ্কিত যশোরবাসী। সুরক্ষা সামগ্রীতে লাগামহীন দামবৃদ্ধি, বাজারে নেই পর্যাপ্ত সরবরাহ।চাহিদার সুযোগে ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ।প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় বাড়ছে জনভোগান্তি।
জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর :
দেশে আবারও করোনা সংক্রমণের ঢেউ। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে মাত্র তিনদিনে প্রাণ হারিয়েছেন করোনায় আক্রান্ত তিনজন। স্বাস্থ্যবিভাগ মাস্ক ব্যবহারে কড়াকড়ি নির্দেশনা দিলেও, বাজারে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ সংকট। একদিকে নেই প্রয়োজনীয় সরবরাহ, অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের অজুহাতে বেড়েই চলেছে মাস্ক-স্যানিটাইজারের দাম।
শহরের দড়াটানা, চিত্রা মোড়সহ একাধিক ফার্মেসি ও সার্জিক্যাল পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আগে যে মাস্কের বক্স পাওয়া যেত ৮০-৯০ টাকায়, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়!
হ্যান্ড স্যানিটাইজারের অবস্থাও ভয়াবহ। দোকানিরা বলছেন “মাল নাই”, অথচ পর্দার আড়ালে ‘বাড়তি লাভের খেলা’। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, এসব মাস্ক তো আগে কেনা, এখন অতিরিক্ত ১০০ টাকা লাভ করা মানে খোলা বাজারে লুট!
➤ সিন্ডিকেটের অভিযোগ উঠছে প্রকাশ্যেই।
সিনা মেডিকেল স্টোরের ওমর ফারুক জানালেন, “সরবরাহ আসছে অল্প, দাম বাড়ছে হঠাৎ। ঢাকায় চাহিদা থাকায় জেলা পর্যায়ে পণ্য আসছে না।লাইফ সার্জিক্যালের রিজভী হোসেন বললেন, “আমরা নিজেরাই পাইকারিতে মাস্ক কিনছি প্রায় দ্বিগুণ দামে। সরবরাহ বন্ধের চাপ আমাদেরও।বিচিত্রা সার্জিক্যালের নবকুমার বলেন, যেটুকু আসছে, সেটারও দাম বেশি। লাভের জন্য নয়, বাধ্য হয়েই দাম বাড়াতে হচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে ব্যবসায়ীরা কি সবাই বাধ্য? নাকি চলছে কৃত্রিম সংকটের পরিকল্পিত খেলা? ক্রেতা এনামুল, কামরুজ্জামান ও সোহান জানান, যেসব মাস্কের দাম বাড়ানো হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই আগে কেনা। এখন অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে লাভ মানে পুরো ব্যবস্থাটাই নৈরাজ্যমূলক। প্রশাসন কি দেখছে না?
এদিকে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, বাজার পরিস্থিতি আমরা খতিয়ে দেখছি। কারও বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা নয়, দরকার দায়িত্ব। স্বাস্থ্যবিপর্যয়ের আশঙ্কায় যখন সাধারণ মানুষ আতঙ্কে, তখন পণ্যের দামের এই আগুন যেন করোনার চেয়েও ভয়ংকর।