প্রতিনিধি 19 September 2024 , 4:45:30 প্রিন্ট সংস্করণ
জেমস আব্দুর রহিম রানা:
যশোরে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন ৬৩৮ জন। এরবাইরে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন অনেকে। এরমধ্যে কেশবপুরে এক পরিবারের ৪ জন ভূয়া সনদে চাকরি করছেন অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি প্রাপ্তদের তালিকা চাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন অনেকে। তারমধ্যে কেশবপুরের বিষয়টি চাউর হয়েছে। তারা বিভিন্ন স্থানে তদবির করে রক্ষা পাওয়ায় চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যশোরের কেশবপুরের পাঁচবাকাবশি গ্রামের এসএম আব্দুল করিম ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। ওই মুক্তিযোদ্ধার সনদে তার ছেলে এস এম আমিনুর রহমান বুলবুল সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ইনচার্জ, মামুন মণিরামপুর খাদ্য গুদামের দারোয়ান ও তার অপর দুই ছেলে সরকারি চাকরি করছেন।
এদের মধ্যে খাদ্য বিভাগে ৩ জন এবং অপর একজন প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তারা সকলেই বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। তারা মুক্তিযোদ্ধা কোটার সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন।
সম্প্রতি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই এর সময় উপযুক্ত প্রমান দাখিল করতে না পারায় কমিটির চার সদস্য বীর মুক্তিযোদা কাজী রফিকুল ইসলাম (মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক মনোনিত সভাপতি) বীর মক্তিযোদ্ধা তৌতিদুরজ্জামান, (সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনিত সদস্য), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুর রহমান (জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনিত সদস্য) ও কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী আফিসার এস এম আরাফাত হোসেন এর যৌথ স্বাক্ষরে আব্দুল করিমকে মুক্তিযোদ্ধা নন মর্মে সুপারিশ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২০ মে কেশবপুর উপজেলা কমান্ডার কর্তৃক আবেদনে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার যে প্রস্তাব দেওয়া হয় তার ৪৭ নং ক্রমিকে আব্দুল করিমের নাম দেখা যায়।
তার পরিপ্রেক্ষিতে ২৫/৩/২০২১ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রানালয় থেকে যে গেজেট প্রকাশ করা হয় তাতে আব্দুল করিমের নাম নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের তালিকার বিষয়টি নিয়ে সেই সময় কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। কাজেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ অনুযায়ী চাকুরীতে প্রবেশ ও সুযোগ সুবিধা গ্রহণ নৈতিক অবঙ্খলন জনিত অন্যায়। এ সকল প্রমানাদী বিবেচনা করে এস এম আমিনুর রহমান বুলবুলসহ তার অপর ভাইদের গ্রহীত সকল সুযোগ সুবিধা ফেরত ও সাময়িক বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কেশবপুরের এসএম আব্দুল করিমের ছেলে ও সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বুলবুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এসএম আব্দুল করিমের অপর ছেলে মণিরামপুর ফুড গোডাউনের দারোয়ান মামুনের মোবাইলে কল করেও পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেশবপুরের এক প্রত্যয়নে দেখা যায় স্থানীয় রাজাকারের তালিকায় ৪নং ক্রমিকে আব্দুল করিমের নাম রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেশবপুরের অপর একটি পত্রে যে ১০ জন জাল সনদধারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে, সেখানে ৪নং ক্রমিকে আব্দুল করিমের নাম আছে। এছাড়া ইউনিয়ন ভিত্তিক রাজাকারের তালিকায় পাঁজিয়া ইউনিয়নে ১৩ নং ক্রমিকে আব্দুল করিমের নাম রয়েছে।