নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে সভা-সমাবেশসহ কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে দলগোছানোর কাজ জোরদারভাবে চালিয়ে যাচ্ছে পতিত সরকারের নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতে ইসলাম। সারাদেশের মতো যশোরেও একাধিক কর্মী সম্মেলন করেছে দলটি। যার ধারাবাহিকতায় রাত পোহালে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) যশোরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই কর্মী সম্মেলনে দেড় লাখ জনসমাগমের টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন জামায়াত নেতা-কর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয় বিপুল লোকসমাগম ঘটাতে দলটির নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা ২০০৮ সালের পর প্রকাশ্যে কোনো সভা-সম্মেলন করতে পারেনি। গত ১৬ বছর গণতন্ত্রের শত্রু ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার দেশের সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর এ জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা ছিল বেশি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাশেম আলীকে কথিত বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। সাবেক আমিরে জামায়াত ভাষা সৈনিক, কেয়ারটেকার সরকারের রূপকার অধ্যাপক গোলাম আযম, নায়েবে আমির মাওলানা এ কে এম ইউসুফ, সিনিয়র নায়েবে আমির আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, পাঁচ বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস সুবহানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে বন্দী রেখে হত্যা করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের অনুগত ও অতি উৎসাহী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যশোরে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১০ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুলি করে পঙ্গু করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার যশোর জেলা জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে ১২০০ এর অধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে মাসের পর মাস কারাগারে বন্দী করে রেখেছিল। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ঘর-বাড়ি ছাড়া করেছিল। বাড়ি ঘরে ঘুমাতে পারেনি অসংখ্য নেতাকর্মী। জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা কার্যালয় খুলতে দেওয়া হয়নি।
জামায়াত নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ২য় বার স্বাধীনতা লাভ করেছে। দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে পেয়ে দেশের সকল রাজনৈতিক দল স্বাধীন ভাবে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে। এমন একটি পরিবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা আজ ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৯টায় যশোরের ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দানে কর্মী সম্মেলন করবে। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি আরও জানান, এই কর্মী সম্মেলনকে ঘিরে যশোরের ইতোমধ্যে প্রায় সবপ্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলেন জেলার দেড় লাখ নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর সিদ্দিক, সহকারী সেক্রেটারি গোলাম কুদ্দুস, রেজাউল করিম, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক সামছুজ্জামান, অ্যাড. গাজী এনামুল হক, অধ্যাপক আবুল হাশিম রেজা, আব্দুল কাদের, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।