অন্যান্য

যৌনকর্মী সুমি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ৩জন গ্রেপ্তার

  প্রতিনিধি 23 October 2024 , 5:12:42 প্রিন্ট সংস্করণ

নাজমুল হোসেন,

স্টাফ রিপোর্টার-

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লীতে শ্বাসরোধ করে যৌনকর্মী সুমি ওরফে মিতা (২৫) কে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যার সাথে জড়িত ৩ জন আসামিকে ঢাকার আশুলিয়া ও টাঙ্গাইল জেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৯টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোছা.শামিমা পারভীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার পাইকশা মাঝাইল গ্রামের আমদ সরদারের ছেলে আব্দুল কাদের (২৪), একই উপজেলার নিচুনপুর গ্রামের মো. জয়নাল শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২০), একই উপজেলার পাইকশা মাঝাইল গ্রামের মাজহারুল শেখের ছেলে মো.মুরাদ শেখ(২২)।

নিহত যৌনকর্মী সুমী ওরফে মিতা ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায় চৈতা বারাত নারিশা গ্রামের কাদের ফকিরের মেয়ে। সে যৌনপল্লীর জাহাঙ্গীর ও দবিরের বাড়ীর দোতলায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোছাঃশামিমা পারভীন জানান, মিতা গত পাঁচ মাস যাবত দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে যৌন ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গত ৭ অক্টোবর রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মিতা প্রতি দিনের ন্যায় অজ্ঞাতনামা তিনজন পুরুষকে রাত্রিযাপনের জন্য মদের বোতলসহ তাঁর রুমে নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ সুমির হাত পা বাঁধা মরদেহ তাঁর রুম থেকে উদ্ধার করে এবং মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

তদন্তে জানা গেছে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগণ ওইদিন আনুমানিক রাত দেড়টার পর থেকে একই তারিখ সকাল ৮ টার মধ্যে যে কোন সময় মিতাকে হাত পা বেঁধে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় মামলা হবার পর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল কাদের (২৪) কে ঢাকা মেট্রোর সূত্রাপুর থেকে, রাসেল শেখ (২০) ও মো. মুরাদ শেখ(২২) কে ঢাকা জেলার আশুলিয়া বিশমাইল হতে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের দেয়া তথ্য মতে, আসামী মুরাদের নিকট থেকে মিতার ব্যবহৃত হাতের ব্রেসলেট ও ১টি টিকলি, আসামী কাদেরের নিকট থেকে মিতার ব্যবহৃত হাতের ব্রেসলেট এবং লুন্ঠিত ১৪ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ১ হাজার ৬৫৫ টাকা এবং আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন আরও জানান, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে মিতা হত্যাকান্ড ছিল একটি সম্পূর্ণ ক্লুলেস হত্যাকান্ড। আমরা আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব দ্রুততার সাথে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ তিন জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদেরকে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামীরা এ ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শরীফ আল রাজীব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুকিত সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আব্দুল মতিন, সহ-সভাপতি কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু, রাজবাড়ী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি
হেলাল মাহমুদসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ