রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এমআরআই, সিটি স্ক্যান ও এক্স-রে ফিল্মসহ (কোড: ৩২৫২১০৫) সরবরাহের জন্য আহ্বানকৃত দরপত্র (আইডি নং: ১১৩০৬৩৯) নিয়ে নানা অনিয়ম ও বিতর্কের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে দরপত্রে অংশ নেওয়া একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্যারাগন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ জাহিদুল ইসলাম স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দফতরগুলোতে লিখিত অভিযোগ করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে দেওয়া লিখিত অভিযোগে জাহিদুল ইসলাম বলেন, দরপত্রে বাংলাদেশের একমাত্র ফুজি ফিল্ম (জাপান) এর প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড শুধুমাত্র রাজশাহীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্যারাগন এন্টারপ্রাইজকে ম্যানুফ্যাকচারস অথরাইজেশন লেটার দিয়েছে। অথচ কার্যাদেশপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল এধরণের কোনো অথরাইজেশন লেটার দিতে পারেনি। গেটওয়ে ইণ্টারন্যাশনাল একজন ডিলারের কাছ থেকে অথরাইজেশন লেটার নিয়ে দরপত্রে অংশ নিয়েছে, যা সরাসরি সরকারি ক্রয়বিধিমালা পিপিআর-২০০৮ এর ধারা-৫৬, উপধারা-১১ ও ১২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। হাসপাতালের দরপত্র কমিটি সঠিকভাবে কাগজপত্র যাচাই না করেই গেটওয়ে ইণ্টারন্যাশনালকে কাজ দিয়েছে বলে দাবি করেন প্যারাগন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম।
তিনি আরো বলেন, এই দরপত্রে তার প্যারাগন এন্টারপ্রাইজসহ মোট তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান হলো- গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল ও মো: শাহাজাহান চৌধুরী।
জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তারা ফুজি এক্সরে ফিল্মের জন্য শুধুমাত্র প্যারাগন এন্টারপ্রাইজকেই অনুমোদনপত্র দিয়েছে। অথচ দরপত্রের মূল্যায়ন কমিটি গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক দাখিলকৃত অনুমোদনপত্রের সত্যতা যাচাই করেনি। গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল একজন তৃতীয়পক্ষ ডিলারের কাছ থেকে অনুমোদনের নাম করে ভুয়া কাগজ দাখিল করে, যা যাচাই না করেই কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।
তিনি আরো বলেন, সাবেক পলাতক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ও আওয়ামী মদদপুষ্টরা সিণ্ডিকেট করে হাসপাতালটিকে এখনো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এই সিণ্ডিকেট ভাঙতে হবে বলেও দাবি জানান তিনি।
জানতে চাইলে গেটওয়ে ইণ্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী সোহেল রানা বলেন, এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। তারা বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা (প্যারাগণ এন্টারপ্রাইজ) যেহেতু ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে অথরাইজেশন নিয়েছে, তাই আমিও ডিলারের কাছ থেকে অথরাইজেশন লেটার নিয়ে জমা দিয়েছি। এ ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ বলেন, এ বিষয়ে গঠিত কমিটি যাচাই করেই কাজ দিয়েছে। এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। আর সর্বনিম্ন দরদাতাই কাজ পেয়েছে।