উত্তরা ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন, নির্বিচারে হত্যা, মুসলিম নারীদের ধর্ষণের প্রতিবাদে দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) উত্তরা ইউনিভার্সিটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেগে উত্তরা ইউনিভার্সিটির মূল ফটকের সামনে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ মানবতার দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু আমরা চিরকাল এই বোঝা বহন করতে পারব না।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই এগিয়ে আসতে হবে! চীন মিয়ানমারের ঢাল, কাগুজে আলোচনায় ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়, নিষেধাজ্ঞা দেয়, কিন্তু বাস্তবে ভূরাজনীতি অগ্রাধিকার পায়।
রোহিঙ্গা সংকট শুধু একটি মানবিক সংকট নয়—এটি একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যর্থতা! আজকে যদি জাতিসংঘ মহাসচিবের আশ্বাস বাস্তবে রূপ না পায়, তবে তা মানবতার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছুই হবে না।
মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। জাতিসংঘের প্রতিশ্রুত সহায়তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।
শাহরিয়ার হোসেন সাগর বলেন আরাকানের রোহিঙ্গাদের একসময়ের জৌলুস পূর্ণ ইতিহাস ছিলো, মধ্য যুগের বাংলাদেশী কবি আলাওয়াল ছিলেন সেখানে রাজ কবি। বর্তমানে তারা নিজেদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে পরাজিত যার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের নেই কোন নাগরিক স্বীকৃতি। সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগস্টে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা গণহত্যা থেকে বাঁচতে এখানে পালিয়ে আসে। এত গুলো বছর পার হলেও তাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের কোন বাহ্যিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দেশের মেরুদন্ডহীন আচরণে আজ একটা জাতী তাদের অস্তিত্ব সংকটে। দেশের ছাত্র সমাজ কে এই সমস্যা নিয়ে কথা বলা উচিত যেন রোহিঙ্গা রা নিজ ধর্ম সংস্কৃতি নিজ মাতৃভূমি তে শান্তি পূর্ণ ভাবে আবার থাকতে পারে। ধর্মপ্রাণ সকল মুসলিদের ও তো এই বিষয়ে কথা বলা উচিত।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম আল ফরিদ বলেন
বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের বোঝা বহন করছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর ভয়াবহ সামরিক নিপীড়নের ফলে জাতিসংঘ যেটিকে বলেছিল “textbook example of ethnic cleansing”—সেই সময় প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লক্ষেরও বেশি শরণার্থী আটকে আছে। বাংলাদেশ মানবতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দিয়েছে, কিন্তু এর মূল্য কী? বছরে প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়, আন্তর্জাতিক সহায়তা ৭০% থেকে নেমে এসেছে মাত্র ২৫%-এ, প্রতি মাসে জন্ম নিচ্ছে ২ হাজার নবজাতক, অপরাধ, মাদক ও নিরাপত্তা সংকট ভয়াবহভাবে বেড়ে যাচ্ছে।
মানববন্ধনে বক্তারা রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক মহল এবং মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এতে অংশগ্রহণ করেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।