মোঃ আমজাদ হোসেন বিজয়নগর প্রতিনিধি,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কৃতি সন্তান ও পল্লী চিকিৎসক মোঃ রিয়াজুল করিম বর্তমানে মারাত্মক লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মরণ সংকটে দিন পার করছেন। দীর্ঘদিন যাবত গ্রামীণ জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগকারী এই মানবিক চিকিৎসক আজ নিজেই চিকিৎসা সেবার বাইরে থেকে অসহায়ভাবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন।
২৬শে আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ১০টার দিকে তিনি মুঠোফোনে সাংবাদিক শামীম উসমান গণীর সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান, তার দুই পায়ের অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে। সংবাদ পাওয়ার পরপরই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ডা. আজিজুল হক কাজল জরুরি ভিত্তিতে তাকে দেখতে ছুটে যান এবং প্রাথমিকভাবে থেরাপি প্রদান করেন।
মাত্র ১০ মিনিটের থেরাপির পর কিছুটা উন্নতি দেখা যায় এবং রিয়াজুল করিম বর্তমানে ধীরে ধীরে পা নাড়াতে পারছেন। চিকিৎসকের মতে, সম্পূর্ণ সুস্থতার জন্য আগামী এক সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
ডা. আজিজুল হক কাজল বলেন,তিনি আমার জাত ভাই। তার এ অসুস্থতায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। যতদিন প্রয়োজন, আমি বিনা পারিশ্রমিকে তার সেবায় নিয়োজিত থাকব। তার সুস্থতা কামনায় সকলের কাছে দোয়া ও সহানুভূতি কামনা করছি।"
গত ছয় সাত মাস ধরে রিয়াজুল করিম শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসা করাতে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকার প্রয়োজন, যা বর্তমানে তার পক্ষে বহন করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে তার চিকিৎসা কার্যক্রম থমকে গেছে।
প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এলাকায় দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে, এক বছরের একটি কন্যা সন্তান এবং স্ত্রীসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার পরিচালনা করতেন। তিনিই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তার অসুস্থতার কারণে পরিবারের আর্থিক অবস্থা বর্তমানে চরম দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে।
রিয়াজুল করিম বলেন,"আমার বাবা মোঃ আব্দুর রহিম একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য এবং গর্বিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছি। আজ আমি অসুস্থ হয়ে পড়লেও পাশে দাঁড়ানোর মতো কাউকে খুঁজে পাচ্ছি না। তাই সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ—আমার সুস্থতার জন্য দোয়া ও সহায়তা করুন।"