প্রতিনিধি 29 April 2025 , 1:58:59 প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকা অফিস
গ্রীষ্মের শুরুতেই বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। রাজধানীতে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রা তুলনামূলক কম হলেও গ্রামের কোথাও কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই।
লোডশেডিংয়ের বিষয়টি অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘‘লোডশেডিং হচ্ছে এবং সামনের দিনগুলোতেও তা হবে।’’ তিনি জানান, চলতি গ্রীষ্মে লোডশেডিংকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে এবং শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং হবে।
এদিকে চলতি বছর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কিছুটা জটিল হয়ে উঠলেও সরকার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। ঈদের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহে স্বস্তি থাকলেও নানা ইস্যুর কারণে সামনে লোডশেডিং বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) জানিয়েছে, ঈদের সময় লোডশেডিং প্রায় শূন্যে নেমে এসেছিল। তবে কিছু এলাকায় কারিগরি ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন জেলায় খবর নিয়ে জানা গেছে, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। ফলে খুলনা, ঢাকার নবাবগঞ্জ, ফেনীর দাগনভূঁঞা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি লোডশেডিং দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট, ফলে ভরা গ্রীষ্মে দৈনিক প্রায় ৪ হাজার মেগাওয়াটের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। পিডিবি’র হিসাবে, এই সময়ে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে।
জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ‘‘গরম যত বাড়বে, এসির ব্যবহার বাড়বে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে বিদ্যুতের চাহিদা এবং লোডশেডিংও।’’ তিনি আরও জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাপেক্ষে বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬,৫০০ মেগাওয়াট থেকে ১৮,০০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানো হবে। তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও প্রয়োজন অনুযায়ী চালানো হবে।
লোডশেডিং সমানভাবে করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহর এবং গ্রাম—দুই জায়গাতেই সমানভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটবে। এ ছাড়া ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা চলছে। ঈশ্বরদীতে ৩০ মেগাওয়াট এবং ভুলতায় ৯০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার স্টোরেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সরকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান জ্বালানি উপদেষ্টা।