সাম্প্রতিক অবিরাম বৃষ্টিতে শালিখা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে বহু মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, রাস্তা ও বসতবাড়ি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাম্প্রতিক অবিরাম বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার ৩০টি গ্রাম পানিতে ভাসছে। রাস্তার ওপর কোথাও কোথাও ২/৩ ফুট পানি উঠে গেছে। ফসলের আর তেমন কোনো চিহ্ন নেই, চারদিকে শুধুই থইথই পানি।
একই সাথে দেখা যায়, চটকাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,চতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেওজগাতি আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ধনেশ্বরগাতি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ধনেশ্বরগাতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার পাশে পানি থৈথৈ করছে। পানি উঠে গেছে ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক।
এছাড়াও ধনেশ্বরগাতি,সেওজগাতি,চতিয়া, গোবিন্দপুর,থৈপাড়া,টিওরখালী,দীঘল নুরপুর সাংদা গজদূর্বা,ভাটোয়াইল গ্রামের শ শ ঘর বাড়িতে পানি উঠে গেছে। তালখড়ি গোবিন্দপুর সড়ক, টিওরখালী উজগ্রাম সড়ক ধনেশ্বর গাতি থৈপাড়া সড়ক,সিংড়া নারিকেল বাড়িয়া,মুনুড়িয়া টিকারী বাজার সড়ক সহ অনেক সড়ক তলিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে।
শতখালী ইউনিয়নের শতখালী গ্রামের সরদার পাড়ার কৃষক মকবুল হোসেন জানান, তিনি প্রায় সাড়ে ৭বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছিলেন, কিন্তু বন্যার কবলে পড়ে তা তলিয়ে গেছে। ভাটোয়াইল গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, বন্যার ক্ষতি পোষানোর কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এক মাসের পরিশ্রমের পর ধান গাছ বড় হয়ে গেলেও এখন সবই পানির নিচে। শুধু ফসলই নয়, ক্ষতি হয়েছে মাছ চাষেও।
শালিখা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২৭ দশমিক ৯ হেক্টর পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। তালখড়ি গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, টানা বৃষ্টি এবং বন্যার পানিতে পুকুর, মাছের ঘের এবং ফসিল জমি আমাদের সব শেষ। নাঘসা গ্রামের আতাউর রহমান বলেন,বন্যার পানিতে শ শ মাছের ঘের ভেসে গেছে।
ইউপি সদস্য কহিনুর রহমান ও নজরুল ইসলাম বলেন, শালিখার নাঘসা বুড়ার বিল ও সিংড়া থৈপাড়ার মাঠের ফসল তলিয়ে গেছে। শালিখা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসাইন শিকদার বলেন, বন্যায় চারিদিকে ফসলি জমি তলিয়ে গেছে, মাছের ঘের ভেসে গেছে।
শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, উপজেলার প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান,১৬ হেক্টর জমির সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক এলাকায় কৃষকরা বাঁধ নির্মাণ করে কিছু ফসল রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছে । আমরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।