সারাদেশ

শিক্ষার নামে জীবন নিয়ে খেলা: মধ্য ভাটিরটেকের টিনের স্কুলে ৩২০ শিশুর দুর্দশা

  প্রতিনিধি 8 May 2025 , 7:00:50 প্রিন্ট সংস্করণ

নোয়াখালী,প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মধ্য ভাটিরটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পাঠ নিচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বিদ্যালয়টিতে নেই কোনো স্থায়ী একাডেমিক ভবন; জরাজীর্ণ ও অস্থায়ী টিনের ঘরেই চলছে ৩২০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান।

এ ঘরগুলোর ভেতরে নেই পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা। বর্ষায় ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষে, আর গ্রীষ্মে ভেতরে টিকেই থাকা দায় হয়ে ওঠে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে স্থানীয় দানবীর হাজী মুমিনুল হকের দানকৃত জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। শুরুতে একটি চার কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবনে পাঠদান চললেও, ভবনটির আয়ুষ্কাল শেষ হওয়ায় তা ভেঙে ফেলা হয় গত বছর। এরপর থেকে মাত্র দুটি অস্থায়ী টিনের ঘরে চলছে পুরো বিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

শ্রেণিকক্ষ সংকটে একাধিক শ্রেণির পাঠ একত্রে নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা, যা শিক্ষার মানেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুর আলম বলেন, “আমি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই কর্মরত। বহুবার নতুন ভবনের জন্য আবেদন করেছি। একবার বরাদ্দও হয়েছিল, কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। সর্বশেষ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে তারা ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শুরুর আশ্বাস দিলেও এখনও কোনো অগ্রগতি নেই।”

তিনি আরও বলেন, “টিনের ঘরে পাঠদান ঝুঁকিপূর্ণ ও অমানবিক। স্থান সংকুলানের অভাবে কখনো কখনো একাধিক শ্রেণির ক্লাস একত্রে নিতে হয়।”

স্থানীয় এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই পরিবেশে পড়ালেখা সম্ভব না দেখে বাধ্য হয়ে আমার ছেলেকে একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করিয়েছি।”

অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ—জেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেখানে আধুনিক ভবন রয়েছে, সেখানে মধ্য ভাটিরটেক বিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। ভবন নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতা চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বাড়বে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।

তাদের জোর দাবি, সরকার যেন দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্থায়ী ও উপযুক্ত একাডেমিক ভবন নির্মাণ শুরু করে।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ