উত্তরা ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি,
সাম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়েরকারী এক ছাত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ হুমকি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলী হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘হাইকোর্টের বিপক্ষে এখন আন্দোলন না করে আগে একে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পদযাত্রা করা উচিত।’
তারই প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ইউনিভার্সিটির মূল ফটকের সামনে এক বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেছে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল ।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন
শিবির কর্তৃক গতকালের প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করা হয়েছে যে, আলি হোসেন তাদের কোনো কর্মী নন। কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় একটি দলের দলীয় সমাবেশে সেই দলের সাথে সম্পৃক্ততা ছাড়া ভলান্টিয়ার হওয়া কি সম্ভব? প্রত্যক্ষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও শিবির তাদের কর্মীকে অস্বীকার করছে এবং তার অপরাধকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। এটি প্রমাণ করে, তারা সত্য গোপন রেখে দায় এড়াতে চাইছে, যা একটি গুরুতর অনৈতিক ও অসত্যাচারমূলক অবস্থান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শিবিরের এ ধরনের অবিবেচক ও নিন্দনীয় কাজরে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
জুলাই যোদ্ধা নাইমুল ইসলাম খান অনিক বলেন নারীর প্রতি হেনস্তা ও বিদ্বেষমূলক আচরণ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের শান্তিকামী ও সভ্য সমাজে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি একজন নারীকে অসম্মান করা মানে সমগ্র মাতৃকুলকেই অসম্মান করা। নারীদের সমাজ থেকে আলাদা করে কেবলমাত্র ভোগ্যপণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা। কোন প্রগতিশীল চিন্তা প্রকাশ করলে কিংবা প্রতিবাদ বা অধিকার দাবি করলে তাকে “শাহবাগী” ট্যাগ দিয়ে বিভাজন সৃষ্টি করা অথবা শুধুমাত্র জেন্ডারের কারণে নারীদের দুর্বল হিসেবে তুলে ধরা—এসবই এক পিতৃতান্ত্রিক সমাজের জঘন্যতম উদাহরণ শিবিরের ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, নারীর প্রতি কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য কিংবা সরাসরি ধর্ষণের হুমকি প্রদানের মতো স্পর্ধার কঠোর জবাব দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে দিতে হবে।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির আরেক শিক্ষার্থী রোকন শেখ বলেন ২৪-পরবর্তী সময়ে আমরা এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখি, যেখানে নারীরা সর্বোচ্চ স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মর্যাদা ভোগ করবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নারীকে হেনস্তা, হয়রানি এবং এমনকি ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে। এই আচরণ কেবল নারীর প্রতি বিদ্বেষ নয়, বরং গোটা সমাজের শান্তি, নিরাপত্তা ও অগ্রগতির জন্য হুমকি স্বরূপ। নারীকে ছোট করে দেখা বা তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা মানে আমাদের স্বাধীনতার মূল্যবোধকে অস্বীকার করা। আমরা মনে করি, কোনো সভ্য সমাজে এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ আচরণের কোনো স্থান নেই।