অন্যান্য

শ্রীপুরে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু।

  প্রতিনিধি 16 March 2025 , 8:29:11 প্রিন্ট সংস্করণ

শামসুদ্দোহা 
শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে কথিত ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, বিচার দাবিতে স্বজনদের আহাজারি!

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক কথিত ডাক্তারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নবজাতকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় শ্রীপুর-বরমী সড়কের পাশে কথিত ডাক্তার মতিনুর বেগম (মালা)-এর বাড়ির নিচে নিহত শিশুর স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়।
নবজাতকের নানি জানান, বাচ্চাটি পেটের ভেতরে উল্টো অবস্থায় থাকলেও সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে চারবার পরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু মতিনুর বেগম মালা নরমাল ডেলিভারির সিদ্ধান্ত নেন এবং চিকিৎসার জন্য ৯০০০ টাকা দাবি করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০০০ টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকিটা পরে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
নবজাতকের নানি আরও বলেন, “আমরা যদি জানতাম তারা নরমাল ডেলিভারি করাতে পারবে না, তাহলে সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে সিজার করাতাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো সুযোগ দেয়নি এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে জোর করে প্রসব করিয়েছে। এর ফলে আমার নাতির মৃত্যু হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।”
স্বজনদের দাবি, মতিনুর বেগম মালা ও তার সহযোগীদের ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকটির মৃত্যু হয়েছে। তারা বলেন, “নবজাতকের জন্মের সময় চিকিৎসাগত কোনো জটিলতা ছিল না, কিন্তু অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে শিশুটির প্রাণ গেছে।”
নিহত নবজাতকের মায়ের নাম সোনিয়া আক্তার (২৪)। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার স্বামী আরিফ কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তারা দুজনই শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদের চালা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
এ ঘটনায় শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনোয়ার হোসেন বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মতিনুর বেগম মালা দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার পরিচয়ে গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে আগেও অনভিজ্ঞতা ও ভুল চিকিৎসার কারণে বহু নারী ও নবজাতক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে অভিযুক্ত মতিনুর বেগম মালার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন অনিরাপদ চিকিৎসার শিকার না হন।
স্বজনদের কান্না আর প্রতিবাদে পুরো এলাকা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কত দ্রুত তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ