বিশেষ প্রতিনিধি, মোঃ মিন্টু:
গাজীপুরের শ্রীপুরে তাকওয়া পরিবহনের স্টাফ কর্তৃক অটোরিকশা চালককে বাস থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে অটোরিকশা চালকরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাস চালক জনিকে আটক করেছে পুলিশ। থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
তবে স্বজনদের অভিযোগ, তাকওয়া পরিবহনের চালকরা হত্যা করে মরদেহ ফেলে যায়, এঘটনায় মামলা নিতে পুলিশের কাছে গেলেও মামলা নিতে গড়িমসি করে তারা। তাকওয়া পরিবহনের বন্ধের দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান নেয় স্থানীয়রা। পরে থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলে যান চলাচল শুরু হয়।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল পৌনে ৮টা থেকে শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি নতুন বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে বেলা পৌনে বারোটা পর্যন্ত । মহাসড়ক অবরোধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজটের তৈরি হয়েছে।
নিহত অটোরিকশা চালক মো. লিটন মিয়া (৩৫) পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাধখলা গ্রামের মোঃ দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি একজন অটোরিকশা চালক। আটক বাস চালক জনির বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
নিহতের স্ত্রী শরমিন বেগম বলেন, গতকাল বিকেলে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসের স্টাফের সঙ্গে আমার স্বামীর বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এরপর স্বামীকে তাকওয়া পরিবহনের স্টাফরা জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেয়ার দু'ঘন্টা পর ঘটনাস্থলের দেড় কিলোমিটার দূরে স্বামীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে স্বামীর হাত পায়ের রগ টাকা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়।
নিহতের ছোটভাই মো. আজিজুল অভিযোগ করে বলেন, ভাইকে তুলে নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে গড়িমসি শুরু করে। রাতভর থানায় অবস্থান করেও মামলা নেয়নি পুলিশ। আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্রে আঘাতে খুন করলো অথচ মামলা করার পরামর্শ দেন সড়ক দুর্ঘটনা। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করে। সড়কে এখন হাজার হাজার মানুষ।
অটোরিকশা চালক মহসিন বলেন, তাকওয়া পরিবহনের বাসের স্টাফরা করতে পারেনা এমন কোন অপরাধ নেই। একজনকে খুন এটা তো তাদের জন্য খুবই সামান্য কাজ। ওরা বাসের নারীদের ধর্ষণ করতে পারে। শিশুদের ধর্ষণ করতে পারে। আমাদ একজন চালককে তুলে খুন করলো অথচ মামলা নিচ্ছে না।
ইমাম পরিবহনের চালক মোকলেছুর রহমান বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘন্টা যাবৎ সড়কে আটকা রয়েছি। সড়কে হাজার হাজার মানুষ অবরোধ করেছে। গাড়িতে যাত্রীরা খুবই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।
এ বিষয়ে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আয়ুব আলী বলেন,' গতকালের সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। গেপ্তারও আছে। তারপরও তারা অবরোধ করে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যান চলাচল করছে।'
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন,"খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তাদেরকে বুঝিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।'
গাজীপুরের জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন,' পুলিশের উর্ধতন কতৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বাস চালককে আটক করা হয়েছে। মামলার পর অবরোধকারীরা মহাসড়ক থেকে সরে আসে। এরপর থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।"