মোঃ আসাদ আলী খান
ফরিদপুরের সদরপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান খানকে (১৪) ইলেকট্রিক হুইলচেয়ার দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আব্দুর রহমানকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুইলচেয়ারটি দেওয়া হয়। চেয়ারটি গ্রহণ করেন রহমানের বাবা। ইউএনও জাকিয়া সুলতানা এবার ঈদে রহমানকে জামাকাপড় কিনে দেওয়ারও আশ্বাস দেন।
রহমান বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের ছৈজদ্দিন মোল্যার ডাঙ্গী গ্রামের রিকশা চালক মো. ছাত্তার খান ছেলে।
জানা যায়, আব্দুর রহমান বাবার রিকশায় চড়ে প্রতিদিন বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আসে। তার দুটি পা বিকল থাকায় হামাগুড়ি দিয়েই চলে রহমানের জীবন।
হাত দুটি দিয়ে কোনো মতে লিখতে পারে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান।
কয়েক দিন আগে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি দৃষ্টিগোচরে আসে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিয়া সুলতানার। তখন প্রতিবন্ধী রহমানের স্কুলে আসার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন ইউএনও।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রহমানের বাবা মো. ছাত্তার খান বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা হলে ছেলেকে নিয়ে আমি রিকশা করে স্কুলে দিয়ে যেতাম।
৪টায় স্কুল ছুটি হলে আবার তাকে বাসায় নিয়ে যেতে হয়। দূরের ভাড়া পেলেও ছেলের জন্য যেতে পারি না। আমার ৮ বছরের একটি মেয়ে আছে। স্ত্রী বাসার কাজ করে। আমার একার উপার্জনের টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে।
’
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রহমান বলেন, ‘আমি অনেক খুশি হয়েছি। এখন আমি একা স্কুলে যেতে পারব। অনেক কষ্ট করে স্কুলে নিয়ে আসত মা-বাবা। স্কুলে এসে বেঞ্চেই শুধু বসে থাকতাম আর কোনো জায়গায় যেতে পারতাম না। এখন গাড়িটির কারণে একটু ঘোরাফেরা করতে পারব।’
এ ব্যাপারে ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে সরকারি কাজে গেলে রহমানকে দেখতে পাই। ওর চলাচলের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের প্রতি সবার যত্নশীল হওয়া উচিত। এতে করে তাদের মন-মানসিকতা ভালো থাকে।’