প্রতিনিধি 19 August 2025 , 9:26:08 প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এবং সার্কেল ট্যাক্স কর অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একাধিক ব্যবসায়ী মহল এবং অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, আন্দোলনকারী সকলকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। বিশেষ করে যারা কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনে নেমেছিলেন এবং বিভিন্ন বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, কাস্টমসের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের মধ্যে অতিরিক্ত কমিশনার মানস কুমার বর্মন (কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট), কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান মজিব (বাকাএভ নেতা), কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম (বাকাএভ নেতা) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এই আন্দোলনের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব কর্মকর্তা মজিবুর রহমান ওরফে মজিবের নাম উঠে এসেছে।
বিশেষ একটি সূত্র আরও জানায়, কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের মো. আলহেলাল তাজ (সিপাই মহাসচিব, বাকাস), কাস্টমস ঢাকা পূর্ব কমিশনারেটের সাব ইন্সপেক্টর মো. মাহবুব হোসাইন (বাকাস সহ-সভাপতি), কাস্টমস পশ্চিম কমিশনারেটের সিপাই মোহাম্মদ শামসুদ্দিন (সাংগঠনিক সম্পাদক), কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের সিপাই মো. বাবুল হোসেন (বাকাস নেতা), কাস্টমস বৃহত্তর করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) ঢাকার সিপাই মো. আবুল হোসেন (সাংগঠনিক সম্পাদক), কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের সিপাই মো. মনজুরুল ইসলাম (আঞ্চলিক কমিশনারেট নেতা) এবং সিপাই মো. আবুল কাশেম তুহিন (আঞ্চলিক কমিশনারেট নেতা) আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়া কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের সিপাই মো. রাজিব হোসেন (সাংগঠনিক সম্পাদক), কাস্টমস ঢাকা পশ্চিম কমিশনারেট ঢাকার সিপাই মো. আবু সাঈদ (বাকাস নেতা), কাস্টমস আঞ্চলিক কমিশনারের সাব ইন্সপেক্টর মো. মিজানুর রহমান (কমিশনার নেতা)ও জড়িত ছিলেন।
ব্যবসায়ী মহলসহ আন্দোলনে অংশ না নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, কাস্টমসের হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় বন্ধ করে দেশকে অচল করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছিলেন। তারা সরকারের কাছে দোষীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ যারা চেয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যাচাই-বাছাই শেষে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এই তালিকার মধ্যে থাকা অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, এবং অনেককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।