অন্যান্য

সাতক্ষীরায় সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ডাঃ হাফিজুল্লাহসহ ৮ জনের নামে মামলা

  প্রতিনিধি 11 March 2025 , 5:13:00 প্রিন্ট সংস্করণ

 

মোঃ দেলোয়ার হোসেন ক্রাইম রিপোর্টার:

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার তথ্য সংগ্রহ করায় সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটোনায় ডাক্তার মো: হাফিজুল্লাহসহ ৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে ভূক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনির দেওয়া আভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের ট্রমা সেন্টারে হামলার ঘটনা ঘটে।

 

অভিযুক্ত ডাক্তার মো. হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারির কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক।

হামলা শিকার সাংবাদিক মনির ইসলাম মনি, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং নিউজ টোন্টিফোর টেলিভিশনের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রহমান কলেজের প্রভাষক আমিনুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই দেখলাম ডাক্তার মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ তার স্টাফদের বলছে ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট আটকে দিতে। এরপরেই ডাক্তারের নির্দেশে তার ক্লিনিকের স্টাফরা ফিল্মি স্টাইলে সাংবাদিক মনিরের ওপর হামলা চালায়। তথ্য সংগ্রহ করায় ডাক্তারের নেতৃত্বে এমন মারধর মেনে নেওয়া যায় না।

 

হামলার শিকার সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, তারাবির নামাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ট্রমা সেন্টারে একটি রোগীকে দেখতে যাই। রোগী দেখে বাইরে বের হয়ে দেখি এক বৃদ্ধ মহিলা ভ্যানের ওপর শুয়ে কাতরাচ্ছে ও কান্নাকাটি করছে। এ সময় আমি তাদের কাছে জানতে চাই কী হয়েছে? রোগীর স্বজনরা জানায়, তারা বৃহস্পতিবার থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল কিন্তু তিন দিনেও ট্রিটমেন্ট না পেয়ে হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে ট্রমা সেন্টার এসেছেন।

তিনি বলেন, তারা আমার কাছে সহযোগিতা চেয়ে আকুতি মিনতি করে। এক পর্যায়ে আমি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারির বিভাগের প্রধান ডাক্তার প্রবীর কুমারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলি। এ সময় রোগীর চিকিৎসা না পাওয়াসহ হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে রোগী বাইরে পাঠানোর বিষয়টি তাকে অবগত করি। প্রবীর কুমার বলেন এর আগেও ডাক্তার হাফিজুল্লাহর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আশায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি ভুক্তভোগী রোগীদের পুনরায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন এবং রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।

 

ভুক্তভোগী সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর এলাকার জুলেখা বেগমের ছেলে ইশার আলী গাজী জানান, আমার আম্মা কয়েক দিন ধরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তবে কয়েকদিন ধরে কোনো প্রকার চিকিৎসা পাচ্ছিল না। আজ হাসপাতালের লোকজন আমাদেরকে বলে চিকিৎসা পেতে হলে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যেতে। তাই আমরা আমার বাবার ভ্যানে করে মাকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাই।

 

তিনি বলেন, ট্রমা সেন্টারের সামনে আসার পরে আমার মায়ের কান্নাকাটি দেখে সাংবাদিক ভাই এগিয়ে আসে। আমরা সব ঘটনা খুলে বললে তিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বড় ডাক্তারের কাছে কল দেন। বড় ডাক্তার তার মোবাইল থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলে পুনরায় মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। এ জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার ও তার লোকজন সাংবাদিক ভাইয়ের ওপর আক্রমণ করে। তারা ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট বন্ধ করে সাংবাদিক ভাইকে বেধড়ক মারধর করে।

 

রোগীর আরেক স্বজন কাজল বেগম বলেন, আমরা সব ঘটনা বলে সাংবাদিক ভাইয়ের সাহায্য চাই। কিন্তু ট্রমা সেন্টারের ডাক্তারসহ তাদের লোকজন সাংবাদিক ভাই আমাদের সহযোগিতা করায় তাকে ব্যাপক মারধর করেছে। মারধর দেখে আমি ও আমার খালা ঠেকাতে গেলে আমাদের ওপরও মারপিট করে।

 

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি শামিনুল হক বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সোমবার রাতে ভূক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনির দেওয়া আভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাকে আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

উল্লেখ ডাঃ মো: হাফিজুল্লাহ’র ট্রমা পলাশপোলস্থ্য নির্মাণাধীন ট্রমা সেন্টার থেকে ২০২০ সালে পুলিশ বিপুল পরিমান গাজা গাছ উদ্ধার করে। সে সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সহায়তায় সে যাত্রায় পুলিশের হাত থেকে রেহায় পান। এছাড়া তার ক্লিনিকে অপচিকিৎসায় জেলা ব্যাপী বহু রোগীকে পঙ্গুত বরণ করতে হয়েছে। এসব ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে বহুবার মানববন্ধনও করেছে ভূক্তভোগীর স্বজনরা। কিন্তু তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় সব কিছু টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে থাকেন।

 

 

 

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহী নিউমার্কেটের সামনে ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাকারি আল ফয়সাল, ব্যুরো প্রধান রাজশাহী রাজশাহী নিউমার্কেটের সামনে ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে স্থানিয় এলাকাবাসীরা। মহানগরীর বিন্দুর মোড় হতে অলকার মোড় পর্যন্ত অংশে অপ্রয়োজনীয় অপরিকল্পিত নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ অবিলম্বে বন্ধ করা দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতীকী ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১ টায় নগরীর নিউমার্কেটের সামনে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিকী ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা ফ্লাইওভার নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ বন্ধের আহ্বান জানান এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন সহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ফ্লাইওভার নির্মাণে প্রচুর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেন। উপস্থিত জনগণ বলেন,আমাদের এ ফ্লাইওভার প্রয়োজন নেই। ফ্লাইওভার নির্মাণের পক্ষে এমন জনগণ জরিপ করলে একটিও বের হবে না। এই ফ্লাইওভার নির্মাণের ফলে রাস্তায় যানজটের দেখা দিচ্ছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জজ কোর্টের এডভোকেট মোর্তজা শাকিল, মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন শুভ, স্থানীয় ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন রাজু, মহম্মদ ওহাব আলী সহ এলাকার সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ী বৃন্দ।

ধর্ষণের ঘটনায় ভারত ছাড়ছেন পর্যটকরা

মাগুরার শ্রীপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী রাব্বী আটক।

কালীগঞ্জে মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

আমি ব্যক্তি স্বার্থে নয় জনগনের স্বার্থে কাজ করতে চাই। –বরিশালে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক

মাগুরায় কে এই চঞ্চল সাধু, কি তার কাজ?