প্রতিনিধি 31 May 2025 , 5:58:00 প্রিন্ট সংস্করণ
সাগর হোসেন রাজ
পল্লী বিদ্যুৎ ৩৩-এর সাব-জোনাল অফিসে দায়িত্বহীনতা, যোগাযোগ করেও মেলে না সাড়া
দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা কুয়াকাটা। যেখানে একই সঙ্গে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় বিশ্বের গুটিকয়েক সৈকতের মধ্যে একমাত্র এখানেই। অথচ সেই কুয়াকাটার মানুষ বছরের পর বছর যে ঘোর অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছে, তার কোনো সদুত্তর নেই সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের কাছেই।
লোডশেডিং নাকি লোড-নির্যাতন?
কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা জোনাল অফিস (পল্লী বিদ্যুৎ ৩৩) এর আওতাধীন এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ না থাকা যেন এখন নিত্যকার নিয়তি। দিনে ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়া যেন ‘স্বাভাবিক নিয়ম’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লোডশেডিং এখানে শুধু গ্রীষ্মকালীন সমস্যা নয় বরং এটি এখন ‘সারা বছরের স্থায়ী ব্যাধি’।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষায়
দিনরাত বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার খেলায় গোটা জনপদ অন্ধকারে। রোদে পুড়ে অফিস করি, রাতে গরমে ঘুমাতে পারি না।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও পর্যটন—সবকিছু ধ্বংসের মুখে
🔹 পর্যটন খাত হুমকিতে:
হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক পর্যটক এক রাত না কাটিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে স্থানীয় পর্যটন খাতে।
🔹 শিক্ষা বিঘ্নিত:
রাতের পর রাত বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করতে পারছে না। ফোন চার্জ না থাকায় অংশ নিতে পারছে না অনলাইন ক্লাস কিংবা পরীক্ষা।
🔹 ব্যবসা বিপর্যস্ত:
বাজারে ফ্রিজিং পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আইসক্রিম, দুগ্ধজাত পণ্য বা ওষুধ রাখার দোকানগুলোতে চলছে ক্ষতির হিসাব।
🔹 জরুরি সেবা ঝুঁকিতে:
হাসপাতাল বা ফার্মেসিগুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। সোলার বা জেনারেটরের ভরসায় চলছে জরুরি চিকিৎসা—যা পর্যাপ্ত নয়।
দায়িত্বহীনতা চরমে ফোনেও মেলে না কর্মকর্তাদের সাড়া!
বিদ্যুৎ সমস্যার বিষয়ে একাধিকবার কুয়াকাটা জোনাল অফিসে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি কেউ। জনসাধারণ অভিযোগ করছে,
অফিসে গেলে বলে বস নেই, ফোন করলে ফোন বন্ধ বা রিসিভ করেন না—তাহলে আমরা যাব কোথায়?
একজন সিনিয়র শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
এটা কি স্বাধীন দেশের চিত্র? যে দফতর জনগণের সেবা দেওয়ার কথা, তারা উল্টো জনগণকে অন্ধকারে রেখে পালিয়ে বেড়ায়!
জনগণের হুঁশিয়ারি: এখনই ব্যবস্থা নিন, না হলে রাজপথে নামবো!
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানায় সাধারণ জনগণ। অনেকেই বলছেন,
সরকারি লোকের কাছে গেলে বলে, কেন্দ্রীয় নির্দেশ ছাড়া কিছু হবে না। তাহলে আমাদের জন্য কে আছে?