সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার তরুণ শিক্ষার্থী মো. আল আমিন লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন। এর মধ্যে গত ৩ মাসে ৪-৫ লাখ টাকা লাভ হয়েছে তার। আল আমিনের সফলতা দেখে এলাকার অনেকে এখন লাউ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আল আমিন সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের জগন্নাথদী গ্রামের কৃষক লিটু শেখের ছেলে।তিনি যদুনন্দী নবকাম পল্লী বিশ্বদ্যিালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১) সকালে কথা হয় তরুণ এই কৃষি উদ্যোক্তা আল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে আমি সবার বড়।

তাই সংসারে আমার দায়িত্বটাও বেশি। পরিবারের দারিদ্রতা বিবেচনা করে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকায় একটি চাকরি করেছি। কিন্তু এতে আমার পোষাচ্ছিল না। পরে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে গত বছর পরীক্ষামূলক সবজি চাষ করি।এতে আমার মনে হয়েছিল, সবজি চাষ করে আমি সফল হতে পারব।

তিনি আরো বলেন, এবার আমি ৯০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে বেড কেটে লাউ চাষ করেছি। এতে লাউ গাছের মাচা, বেড কাটা, সার-ওষুধসহ সব মিলিয়ে আমার ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে লাউক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হলেও মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় প্রচুর পরিমাণে লাউ ধরে। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ লাউ বিক্রি করে ফেলেছি।

গাছে থাকা বাকি লাউগুলো হয়তো কিছুদিনের মধ্যে বিক্রি করে ফেলব। সব মিলিয়ে হিসেব করে দেখিয়েছি, খরচ বাদে ৯০ শতাংশ জমির লাউ বিক্রি করে মাত্র ৩ মাস ১০ দিনে আমার ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা আয় হবে। যদি বৃষ্টিতে ক্ষতি না হতো, তাহলে ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারতাম।

আল আমিন বলেন, লাউয়ের পাশাপাশি ৭৫ শতাংশ জমিতে কলা, ২০ শতাংশ জমিতে পেঁপে ও কিছু জমিতে মরিচ আবাদ করেছি। এতেও মোটামুটি আয় হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি জমিতে লাউ চাষ করব। আমার লাউ চাষে সফলতা দেখে এলাকার অনেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। তারাও লাউ চাষ করতে আগ্রহী। আমি তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। আমি চাই, আমার মতো সবজি চাষ করে সবাই সফল হোক।

সালথা উপজেলা কৃাষ কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, কয়েকটি হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন আল আমিন। আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় তার লাউক্ষেত পরিদর্শন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নানা ধরণের পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই, আল আমিনের মতো তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা প্রত্যেক ঘরে ঘরে তৈরি হোক। আমরা তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করব।