মো লুৎফুর রহমান রাকিব আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি
সৌদি আরবে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে উলিপুর উপজেলার বাউরা গ্রামের নারী সাহের বানু লিপি। মানবিক উদ্যোগে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করায় জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানার ভূমিকায় গ্রামজুড়ে এখন স্বস্তি আর আনন্দের জোয়ার বইছে।অভাবের তাড়নায় প্রায় নয় মাস আগে লিপি রিয়াদে গৃহকর্মীর কাজে যান। সেখানে আহমেদ নামের এক পুলিশের বাড়িতে কর্মরত অবস্থায় তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। জীবননাশের ভয় তৈরি হলে মোবাইল ফোনে দেশে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। সেই খবর পেয়ে দিশেহারা পরিবার সাহায্যের জন্য নানা জায়গায় চেষ্টা শুরু করে। অবশেষে লিপির ছোট বোন মারুফা রুমী হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ জানান।নুসরাত সুলতানা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান এবং সমাধানের বিকল্প পথ খুঁজতে থাকেন। তিনি জানতে পারেন, কুড়িগ্রামের সাবেক বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পরিচিত। তাই রুমীর বার্তাটি তাঁর কাছে ফরোয়ার্ড করে সহযোগিতা চান। পরবর্তীতে লুৎফর রহমান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধার কার্যক্রমে জোর দেন।
অবশেষে জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানার সক্রিয় প্রচেষ্টা ও লুৎফর রহমানের সহযোগিতায় ১৫ আগস্ট সাহের বানু লিপি নিজ দেশে ফিরতে সক্ষম হন। পরিবারের কাছে ফিরে তিনি জেলা প্রশাসক, লুৎফর রহমান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে দাবি জানান—“কোনো নারীকে যেন আর সৌদির মতো দেশে পাঠানো না হয়।”
মানবিক উদ্যোগে ভূমিকা রাখার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে লুৎফর রহমান বলেন, “এ ধরনের কাজের অনুভূতি ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। রাজনৈতিক জীবনে অনেক কিছু করেছি, কিন্তু নির্যাতিত এক নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনার অভিজ্ঞতা অনন্য।” তিনি জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “যদি সেদিন তিনি সাহায্যের বার্তাটি উপেক্ষা করতেন, তবে এই গল্পের পরিণতি ভিন্ন হতে পারত।