অপরাধ

স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রীর বিশ পানে মৃত্যু 

  প্রতিনিধি 30 January 2025 , 2:19:16 প্রিন্ট সংস্করণ

 

মোঃইকরামুল হোসেন

 

মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাঐযানী গ্রামে ঘটে গেল এক বিস্ময়কর ঘটনা । বাঐযানী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী মোছাঃ মুক্তি বেগম (৩২)স্বামীর সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে দুজনের মাঝে বেশ কথা কাটাকাটি হয়, জানা যায় স্বামী মোঃ গিয়াস উদ্দিন তার স্ত্রী কে বাবার বাড়ি থেকে নগদ অর্থ আনার জন্য চাপ দেন এটাই যে প্রথম বার ঘটনাটি তেমন নয়, এর পূর্বেও তিনি স্ত্রী কে বাবার বাড়ি থেকে নগদ অর্থ আনার জন্য চাপ দেন, কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে স্ত্রী মোঃ মুক্তি বেগের বাবা ছিলেন একজন দিনমুজু বলাই যায় তিনি দিনে আনেন দিনেই খান, এত কষ্টের মাঝেও তিনি তিনার মেয়ের জামায় কে কয়েক বার নগদ অর্থ প্রদান করেন তিনি জানান আমি এই অর্থ দিয়েছি যাতে করে আমার মেয়ে ঐ বাড়িতে একটু সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, কিন্তু ওরা আমার মেয়েকে দিনের পর দিন অত্যাচার করেই যাচ্ছে এর পরও আমরা তাদের সাথে কখনো খারাপ আচরণ করিনা করাণ তারা আমাদের আত্মীয়,

সর্বশেষ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে কৃষি কিটনাশক (ফুরাডন) সেবন করে গত মঙ্গলবার দুপুর ১২ঃ৩০ মিনিটে এই খবর পেয়ে স্বামী গিয়াস উদ্দিন তার স্ত্রীর কাছে না এসে তিনি পলাতক বলে জানান স্ত্রী মোছাঃ মুক্তির বেগমের পবিবার ৷ কীটনাশক সেবনের পর মূহুর্তে শরীরে মৃত্যুর যন্ত্রা আসার আগেই মোছাঃ মুক্তি তার স্বামীর বাড়ি অথাৎ মুক্তি তার শশুর বাড়ি পরিবারের সকল সদস্যদের জানায় আমি (ফুরাডন) নামক এক কিটনাশক খেয়েছি আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করো আমি বাছতে চায়, কারণ মুক্তি তখন বুঝতে পারে যে সে ভুল কাজ করে ফেলেছে সে তার সন্তানের কথা ভেবেই তাদের নিকট আর্তনাদ করে, আসলে কেউ এই সু্ন্দর পৃথিবীর মহমায়া ছেড়ে যেতে চায় না, কে শুনে কার কথা নিষ্ঠুর গিয়াসের পরিবারের সদস্যারা তাকে গুরুত্বহীন ভাবে রাখেন বাড়িতেই বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন এবং রং তামাশায় হেসে খেলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন নিষ্টুর গিসাস উদ্দিনের পরিবার

তাদের এই নিষ্ঠুরতা বুঝতে পেরে মুক্তি তার জীবনের মায়া একপর্যায়ে ছেড়েই দিয়েছে , তার পরেও তিনি বাচার জন্য এই ঘটনা জানান মেয়েকে দিয়ে তিনার বাবার বাড়ির লোকজন কে বাবার বাড়ির লোকজন তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য যখন ছুটে আসে মুক্তির পরিবারের সদস্যারা তখন মুক্তি কে হাসপাতালে নিতে গেলে মুক্তি শশুর বাড়ির লোকজন তাদেরকে অ’কৎত্ব ভাষায় গালি-গালাজ করে , মুক্তির পরোবার এই বিষয়ে তোয়াক্কা না করে তারা তাদের মেয়ের জীবন বাচানোর জন্য মেয়েকে একটা ভ্যান গাড়িতে তুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তির শশুর বাড়ির লোকজন তাদের উপর ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন এ বিষয় জানান মুক্তির বাবার বাড়ীর সদস্যরা । এ মতঅবস্থায় মুক্তি কে হমম্মদ পুর উপজেলা স্বাথ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার দেখেন তার শরীরে অপর্যাপ্ত খেচুনি এবং মুখে লালা,, তখন ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খেচুনি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে, অনেক টা সময় পার হয়ে যাওয়ার কারনে কোনো মেডিসিন তার শরিরে কাজ করছিল না, একপর্যায়ে শরীরের অবনতি দেখা দেওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাট করেন। মহম্মদ পুর উপজেলা স্বাথ্য কমপ্লেক্স থেকে ফরিদপুর মেডিকেলে যাওয়ার পথেই রোগী মারা যায় তখন আর তারা ফরিদপুরে না গিয়ে ফিরে আসেন মহম্মদপুর সাস্থ কমপ্লেক্সে এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থানে ছুটে আসেন মহম্মদপুর থানা পুলিশ

ঘটনা স্থানে গিয়ে জানা যায় মোঃগিয়াস উদ্দিন একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছিলেন, গিয়াস উদ্দিনের বন্ধু বা সহপাটি দের থেকে জানা যায় তিনি একজন নিষ্ঠা ও নিতিবান মানুষ তবে কেনো সে এমন কাজ করলো তা সকলেরই যেনো অ’জানা সে প্রতিনিয়তই টাকা পয়সার দাবি করে মুক্তি কাছে। মুক্তির বাবা মোঃনুর মিয়া মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের ফলোশীয়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তির বাবা একজন দিন মুজুর হতদরিদ্র অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে ইট ভাটায় শ্রম দিয়ে তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন ৷ মাঝেমধ্যেই মুক্তি কে টাকার জন্য নির্মমভাবে নির্যাতন করতো বলে জানান মুক্তির আপন জনেরা । কিন্তু এবারও টাকার নির্যাতনে শিকার হয় এই নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে কৃষি কীটনাশক (ফুরাডন)খেয়ে জীবণ হারাতে বাধ্য হতে হলেন মোছাঃ মুক্তি পরিবার সূত্রে জানা যায় উক্ত আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে কোনো মামলা হয়নি তবে স্বামীঃ মোঃ গিয়াস উদ্দিন ও মোছাঃ মুক্তির রেখে যাওয়া এতিম তিন ছেলে মেয়েদের নামে গিয়াস উদ্দিনের সকল সম্পদ জমি জমা লিখে দিলেই আমরা মিমাংসা করবো,তাদের কথায় সহমত হয়ে সন্তানের নামে সকল সম্পদ লিখে দিবেন বলে জানান গিয়াস উদ্দিনের পরিবার

 

উক্ত লাশ আজ বুধবার সকাল ৯:৩০ মিনিটের সময় ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা মর্গে পাঠানো হয়

আশে পাশের এলাবাসী বলেন এমন স্বাসী ও পরিবার যেনো কোনো মেয়ের জীবনে না আসে এবং মোছাঃ মুক্তির এই অকাল মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন । মুক্তির পরিবারের আর্তনাদে যেনো আকাশ বাতাস ভারি হযে যাচ্ছে দেখাযায় মোছাঃ মুক্তির মা আচল তুলে আল্লাহ পাকের নিকট বিচার দিচ্ছেন এবং বলছেন হে আল্লাহ তুমি আমার মেয়ে কে মাফ করে জান্নাত নসিব করো, মোছাঃ মুক্তির বাবা সকলের নিকট তার মেয়ের মাগফিরাতের জন্য দোয়া চেয়েছেন, আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করুক,, আমিন,,,

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ