অন্যান্য

হত্যাচেষ্টা মামলাঃ আওয়ামীলীগ নেতা জিয়াসহ আসামি ১৪ জন

  প্রতিনিধি 13 August 2025 , 1:01:02 প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃ ইসমাইল হোসেন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ থেকে ফেরার পথে প্রবাসী যুবককে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। আহতের ভাই মো. তুফানী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে এ মামলা দায়ের করেন। হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। মামলা নং ১৪।

এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানকে। অন্য আসামিরা হলেন- জিয়া মেম্বারের ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার মো. রিশান, গোলাব আলী, মো. দুরুল, মো. জেনারুল, মো. বাশির, সুমন আলী, মো. আমিন, কুরবান আলী, আনারুল ইসলাম, মো. মিজান, মো. মেহেদী, মো. মাইনুল ও মো. রিহাজ। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া গ্রুপের লোক।

মামলার বিবরণে বলা হয়, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদের মদদে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলেন। গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও তাদের দাপট কমেনি। আহত ইসরাইল হক কিনু দীর্ঘ সাত বছর ধরে কাতারে থাকেন। গত ৩ আগস্ট তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে শহরের মীরের খৈলান এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশীদের সমাবেশে যান কিনু। ফেরার পথে আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া মেম্বারের নির্দেশে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কিনুর ওপর হামলা করে। তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে রক্তাত্ব জখম করা হয়।

আহত ইসরাইল হক কিনুকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ সংকট থাকায় তাকে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নেয়া হয়। মগজে রক্ত জমাট বেধে অবস্থার অবনতি হলে জরুরি অপারেশন করে চিকিৎসকরা। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জিয়া মেম্বার আওয়ামী লীগ শাসনের বিগত ১৬ বছরে ইসলামপুরের ত্রাস ও মাদককারবারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে বোমাবাজি ও মহানন্দা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরও পুলিশের ছত্রছায়ায় জিয়া মেম্বার এলাকাতে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখেন।

ইসলামপুরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে জিয়া গ্রুপের প্রকাশ্য তৎপরতা। সম্প্রতি ইসলামপুরে সরকারি চাল চুরি, হত্যাচেষ্টা ও ককটেলবাজির একাধিক ঘটনার অন্যতম আসামি জিয়া মেম্বার। গত কয়েক মাসেই তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে। এতগুলো মামলার এজাহার নামীয় আসামি হওয়া স্বত্বেও তাকে গ্রেপ্তার করছেনা পুলিশ। সেই থেকে ইসলামপুরে জিয়া আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তিনি মাদকের গডফাদার সাদিকুল ইসলাম, গোলাব, সামিরুল, কিশোর গ্যাং লিডার আমিরুল, বাবুসহ বেশ কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এই চক্রটি সীমন্ত পথে মাদক ও বিস্ফোরক এনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন বলে এলাকাবাসী জানান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. মতিউর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতের ভাই মো. তুফানী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে এ মামলা দায়ের করেন।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ