মোগলহাট রেলওয়ে স্টেশন রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলার একটি রেলওয়ে স্টেশন। এই স্টেশনটি বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। এটি ছিল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি রেল ট্রানজিট পয়েন্ট।
এই স্টেশনটি ১৯১২ সালে স্থাপিত হয়। উনিশ শতকের শুরুতে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে কেন্দ্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। বেঙ্গল ডুয়ার্স রেলওয়ে মালবাজার পর্যন্ত একটি লাইন তৈরি করে। কোচবিহার রাজ্য রেলওয়ে, গীতলদহ-জয়ন্তী ন্যরো গেজ লাইনটি তৈরি করে। গোলকগঞ্জ-আমিনগাঁও লাইন থেকে, আসামের সাথে একটি সংযোগ স্থাপন করা হয়। ভারতের স্বাধীনতার প্রাক দিনগুলিতে রাধিকাপুর, বিরল, পার্বতীপুর, তিস্তা, গীতলদহ এবং গোলোকগঞ্জ হয়ে যাওয়া একটি মিটারগেজ লাইন বিহারের কাটিহারের সাথে আসামের ফকিরাগ্রামকে সংযুক্ত করেছিল।
১৯৪৭ সালের পর, পাকিস্তান ও ভারত রেল ট্র্যাফিক পুনরায় চালু করার বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করলে, ১৯৫৫ সালে মোগলহাট-গীতলদহ রেললাইন চালু হয়।
মোগলহাট-গোলকগঞ্জ (ভারত) রেললাইন ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে যায়। মোগলহাট-গোলকগঞ্জ সেকশনটি মিটারগেজ রেললাইন ছিলো। মোগলহাট থেকে লাইনটি ভারতের গিতালদহ থেকে বামনহাট হয়ে বাংলাদেশের (পাটেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারি-সোনাহাট) হয়ে আবার ভারতে ঢুকে গোলকগঞ্জ পর্যন্ত যায়। পরে পাটেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারি-সোনাহাটের বাংলাদেশি অংশ তুলে ফেলা হয়।
এই রেলপথের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার উৎপাদিত পাট, চা, তামাক, চামড়া, ধান, চাল ও শালকাঠ ভারতে যেত। ভারত থেকে কয়লা, লুবলেকেটিং ওয়েল, ডিজেলসহ অন্যান্য মালামাল আমদানি করা হতো। এছাড়াও দু’দশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চলাচলে মোগলহাটে একটি চেকপোস্ট ও অভিবাসন ব্যবস্থা চালু ছিল। প্রতিদিন দুই দেশের শতাধিক পাসপোর্টধারী যাত্রী মোগলহাট হয়ে ও যাতায়াত করতো। সড়ক পথে যোগাযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮০ দশকে ১২ কিলোমিটার লালমনিরহাট-মোগলহাট রেলপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই স্টেশন থেকে ১৯৯১ সালে রেল ও ২০০২ সালে অভিবাসন বন্ধ হয়ে যায়।