প্রতিনিধি 2 September 2025 , 4:53:12 প্রিন্ট সংস্করণ
কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও সেই আইন ভঙ্গ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্রদলের এমন কর্মসূচিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও, ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানায় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রদল। এসময় মূল ফটক থেকে একটি মিছিলটি নিয়ে শহীদ আব্দুল কাইয়ুম চত্বর ও প্রশাসনিক ভবনে হয়ে মূল ফটকে এসে শেষ করেছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন‚ ‘আমাদের সেন্ট্রাল ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনুমতি নেইনি বা অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করিনি।’
তিনি আরো বলেন‚ ‘আমি এ দলের আইডিওলোজিতে বিলং করি আমি আমার দলীয় ব্যানারেই প্রোগ্রাম করবো। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ জানাবো ১০০ তম সিন্ডিকেটকে অবৈধ ঘোষনা করে সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য।’
জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শাখা ছাত্রদল।
ফার্মেসি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম ভূঁইয়া বলেন,”এই বিষয়টিকে আমি অবশ্যই নেতিবাচকভাবে দেখছি। কারণ জুলাই-আগস্টে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল শিক্ষার্থী তখন একটি দাবি তুলেছিল যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্ররাজনীতি চলবে না। সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় করেছে যে ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের ছাত্ররাজনীতি চলবে না। এখন কেউ চাইলে বাইরে করতে পারে। কিন্তু যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কেউ করে, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের ঘটনার পেছনে আমার মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো না কোনো ইন্ধন রয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন প্রোগ্রাম করছে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিষেধ করেনি। এটি ধীরে ধীরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করবে।”
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফারুক আল নাহিয়ান বলেন, “ছাত্রদল যদি ফ্রেমিং ও ট্যাগিং ব্যতিরেকে নারী হয়রানির প্রতিবাদে আন্দোলন করে থাকে, তাহলে সেটি যৌক্তিক এবং সমর্থনযোগ্য। তবে সেই প্রতিবাদ অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় কিংবা ক্যাম্পাসের সীমানার বাইরে হতে পারত। ক্যাম্পাসে দলীয় পরিচয়ে যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক যেকোনো আন্দোলনকেই আমরা সন্দেহের চোখে দেখি এবং পরবর্তীতে এটিকে ছাত্ররাজনীতির প্রতিষ্ঠার একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করি।”
ছাত্রদলের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জানান দিতে ধর্ষণের হুমকির প্রতিবাদে করেছি। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে করিনি। ছাত্রদলের ব্যানারে করেছি কারণ এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছিল। অছাত্ররা থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই সাধারণ শিক্ষার্থী ছিল।’
প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আমাদের থেকে তারা অনুমতি নেয়নি। ফলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। আর আমরা দেখেছি সেখানে এমন লোকও ছিলো যারা বর্তমান শিক্ষার্থী না। যেহেতু ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ তাই তাঁরা কেন বিক্ষোভ করেছে এটা আমরা আগামীকাল তাদেরকে ডেকে জানতে চাইবো।’