প্রতিনিধি 3 October 2024 , 12:37:11 প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুরে তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারও ঘটলো লিফটের বিভীষিকাময় দুর্ঘটনা। ছোট্ট সন্তানকে চিকিৎসা দিয়ে ঘরে ফিরতে পারেননি পিতা। এবার লিফটের কারিগরি ত্রুটি কেড়ে নিলো এক অসহায় বাবার জীবন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো? কেন প্রতিনিয়ত ঘটছে এমন মৃত্যুর মিছিল? জানুন বিস্তারিত।
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারও ভয়াবহ লিফট দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারালেন এক রোগীর স্বজন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর ২০২৪) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের ১০ তলায় লিফট ব্যবহারের সময় মৃত্যু হয় জাহিদুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তির। তাঁর শিশুপুত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, জাহিদুলের সন্তান হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। রাতের বেলায় নিচে নামতে লিফটের বাটনে চাপ দিলে লিফটের দরজা খুলে যায়। তবে দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে লিফটের মেঝে ছিল না। পরিস্থিতি না বুঝে তিনি পা দিতেই নিচে পড়ে যান এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এই সময় তাঁর শ্যালিকাসহ অন্য রোগীর স্বজনরা কাছাকাছি থাকলেও অল্পের জন্য রক্ষা পান।
লিফটের এই কারিগরি ত্রুটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল। হাসপাতালের আনসার সদস্য আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই লিফটের সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু তাতেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দুর্ঘটনার পর আমরা তাঁকে (জাহিদুল) রক্তাক্ত অবস্থায় লিফটের নিচ থেকে উদ্ধার করি।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘জাহিদুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় আমাদের কাছে আনা হয় এবং আমরা তাঁকে মর্গে পাঠাই।’
হাসপাতালের পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ দুর্ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, লিফটের সমস্যাটি পূর্বে থেকেই ছিল এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আকাশ আহমেদ নামের একজন বলেন, ‘জাহিদ ভাই ও আমি পাশাপাশি বেডে ছিলাম। চা খেতে গিয়ে শুনি, লিফটের ওপরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাঁর শ্যালিকা তখন চিৎকার করছিলেন। আমরা দ্রুত নিচে এসে দেখি কেউ নেই। একজন লিফটম্যানকে ডেকে এনে লিফট খুলে তাঁকে বের করি, কিন্তু ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়ে যায়।’
হাসপাতালের পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ দুর্ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, লিফটের সমস্যাটি পূর্বে থেকেই ছিল এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফট নিয়ে এর আগেও দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। ১২ মে, ২০২৪ তারিখে মমতাজ (৫০) নামের এক রোগী লিফটে আটকে পড়ে মারা যান। ৩ মে, ২০২৪ তারিখে জিল্লুর রহমান (৭০) নামের এক রোগী লিফটের পাশের ফাঁকা জায়গা দিয়ে পড়ে নিহত হন।