যে দিন পত্রিকার লাইভ থামেনি, গুলির মধ্যেও চলেছে প্রতিবেদন : আগস্ট মহম্মদপুর: রক্তের দিনে সাংবাদিকতা দাঁড়িয়েছিল সাহসের পক্ষে ‘দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ’ মাঠে, অফিসে এবং জনতার কণ্ঠে
মহম্মদপুর, মাগুরা / ঢাকা অফিস
"তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার ! কে বলেছে ? স্বৈরাচার ! এই শ্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছিল সেদিনের বাংলাদেশ। আর সেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছিল একটি পত্রিকা 'দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ'।
মহম্মদপুরের রক্তাক্ত সকাল ৪ আগস্ট ২০২৪
সকাল ১০টা। মহম্মদপুর উপজেলার আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে জড়ো হন হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। তাদের একটাই দাবি বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।তবে আন্দোলনের মূল গর্জন শুরু হয় ১১টায়, কলেজের দক্ষিণ পাশে জমায়েত থেকে। আন্দোলনকারীরা তখনও জানতেন না, এই দিনটি তাদের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন হয়ে উঠবে।
প্রথম গুলির আগমুহূর্ত
একদিকে মিছিল, অন্যদিকে পুলিশের অবস্থান। পুলিশ ‘শান্তিপূর্ণ থাকার’ আহ্বান জানালেও shortly একদল মিছিল করে কলেজ মূল ফটকে পৌঁছায়। সেখানে তর্ক-বিতর্ক, উত্তেজনা এবং হঠাৎ পুলিশের গুলিবর্ষণ শুরু হয়।
একজন শিক্ষার্থী, মোঃ সুমন, গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। তার লাশ পড়ে থাকে জনতার মাঝে হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায় সময়।
গণআক্রোশ ও প্রতিরোধের দাবানল
সুমনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা ঘেরাও করে উপজেলা প্রশাসন, ভাঙচুর করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিস। এরপর জনতা এগিয়ে যায় মহম্মদপুর থানা ঘেরাও করতে।
থানা প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর আগেই আবার গুলি শুরু করে পুলিশ। মাদ্রাসা ছাত্র মোঃ আহাদ পুলিশের রাইফেলের গুলিতে শহীদ হন। দীঘা ইউনিয়নের ১৩/১৪ বছর বয়সী এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে ফরিদপুর হয়ে ঢাকায়, এখন দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন।
মাঠে ছিলেন ‘দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ’ টিম সাহসের আরেক নাম—
এই ভয়ংকর দিনটি যখন জাতির সামনে আনার মতো সাহস কেউ দেখাতে পারেনি, তখন দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ মাঠে ছিল নির্ভয়ে, অবিচল।
প্রতিবেদক: ফয়সাল হায়দার ক্যামেরাম্যান: রবিউল ইসলাম অনিক তারা আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লাইভে ছিলেন, সরাসরি দেখিয়েছেন গুলি, মৃত্যু, জনতার প্রতিক্রিয়া, থানা ঘেরাও এবং রক্তাক্ত বাস্তবতা। ইটের আঘাতে আহত হন তারা দুজনেই, তবুও তারা পিছু হটেননি। তাদের রিপোর্টিং ছিল সত্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত যা দেশের গণমাধ্যমে খুব কমই দেখা যায়।
সারাদেশে ‘দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ’-এর সম্মিলিত সাংবাদিকতা
৪ আগস্ট শুধু মহম্মদপুরেই নয়, সারাদেশে চেতনায় বাংলাদেশের টিম সক্রিয় ছিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, যশোর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ প্রতিটি জেলায় প্রতিনিধিরা আন্দোলনের খবর সংগ্রহ, প্রচার ও বিশ্লেষণে কাজ করেছেন। প্রায় ৫০টি ফেসবুক লাইভ, ৭৮টি প্রতিবেদন, ২০টির বেশি ভিডিও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ওই দিন ও পরের ২৪ ঘণ্টায়।
এটি ছিল এক মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার সফলতম মাইলফলক।
নেতৃত্বে ছিলেন কে.এম. মোজাফ্ফার হুসাইন মনিটরিং রুমের মহাযোদ্ধা এই বিশাল কভারেজের পেছনে যিনি ছিলেন ছায়া কমান্ডার তিনি 'দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ'-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, কে.এম. মোজাফ্ফার হুসাইন। তিনি সেদিন অফিসে থেকেও ছিলেন🔹 প্রতিটি লাইভের পেছনে,🔹 প্রতিটি প্রতিবেদকের কানে,🔹 প্রতিটি সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দুতে।তিনি নিজের হাতে পুরো পরিস্থিতি মনিটর করেন, দিকনির্দেশনা দেন কাকে কখন নামতে হবে, কীভাবে কাভার করতে হবে, বিপদে পড়া রিপোর্টারদের সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেন। উনার ছিল একটাই কথা ❝ সংবাদ ছাপিয়ে ইতিহাস লিখতে চাই, সত্যের জন্য যুদ্ধ করতে চাই। যদি গুলি চলে, 'চেতনায় বাংলাদেশ' থামবে না। ❞
— কে.এম. মোজাফ্ফার হুসাইন
তিনি শুধু একজন সম্পাদক নন, তিনি ছিলেন একটি গনমাধ্যম সৈনিক বাহিনীর জেনারেল। এই দিন আমাদের জন্য শুধুই এক তারিখ নয় এটি প্রতিজ্ঞা, ইতিহাস ও সাংবাদিকতার জাগরণ
৪ আগস্ট ২০২৪ একটি রক্তাক্ত অধ্যায়, একটি প্রতিবাদের চূড়া, একটি সংবাদপত্রের জন্মসার্থকতার দিন। সেদিন দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ ছিল মাঠে, ছিল মানুষের পাশে, এবং ছিল নেতৃত্বে সত্য প্রকাশের এক আপসহীন যাত্রায়।