অন্যান্য

সার সরবরাহে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসরণ, বিপাকে সিন্ডিকেট চক্র

  প্রতিনিধি 13 January 2025 , 10:12:35 প্রিন্ট সংস্করণ

 

 

< মতিন গাজী

 

কৃষকের কথা ভেবে সরকারি নীতিমালা অনুসরণের মধ্যদিয়ে দেশব্যাপী সার সরবরাহ শুরু করেছে যশোরের অভয়নগরে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপ। ফলে বিপাকে পড়ে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে স্থানীয় একটি সার সিন্ডিকেট চক্র। বৈধ প্রতিনিধি ছাড়া সার উত্তোলন করা যাবে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভয়নগরে নওয়াপাড়া বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন উপজেলার ডিলারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের বরাদ্দের কাগজ কেনার চেষ্টা করছে। তারা একটি সিন্ডিকেট করে এক হাজার ৫০ টাকার সার এক হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ওই চক্র আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের বিরুদ্ধে কৌশলী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ৮৩ হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ ছিল। ডিলার কর্তৃক উত্তোলন করা হয়েছে ৮৩ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে ৭২ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন সারের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে ৭১ হাজার ৪২৫ মেট্রিক টন। বাকি সার সরবরাহ চলমান রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৭৫ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ হয়েছে। সরবরাহ চলমান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গত ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখে তিন বিসিআইসি ডিলার সার উত্তোলন করে স্থানীয় ওই সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে পাচারের চেষ্টা করছিল। এসময় উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সারসহ কয়েকটি ট্রাক আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করে কৃষি অফিস।

এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাঈদুর রহমান লিটু বলেন, কৃষিমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সরকারি সার নীতিমালা অনুসরণ করে কাজ করা হচ্ছে। অভয়নগরে অসাধু সার সিন্ডিকেট ভাঙতে আমরা বদ্ধ পরিকর। কৃষকের সেবায় নোয়াপাড়া গ্রুপ সার্বক্ষনিক কাজ করে চলেছে।

বিএডিসি খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক শরিফ সাইফুল আলম বলেন, সার আমদানি ও সরবরাহে নোয়াপাড়া গ্রুপের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ ফর্টিলাইজার এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ জালাল হোসেন বলেন, সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করে সার সরবরাহ করা যাবে না। কোনো ডিলার যদি সময় মত সার উত্তোলন করতে না পারে সেক্ষেত্রে আমদানিকারক ওই সার অন্য ডিলারের নামে বরাদ্দ দিতে পারবে। বরাদ্দকৃত সার নিয়ে কোনো সিন্ডিকেটের অসাধু কার্যক্রম বরদাস্ত করা হবে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লভলী খাতুন বলেন, সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা ২০০৯ অনুযায়ী একজন ডিলার নিজে অথবা তার বৈধ প্রতিনিধি ছাড়া সার উত্তোলন করতে পারবেন না। বরাদ্দকৃত সার সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষি অফিসের কঠোর নজরদারী রয়েছে। প্রতিনিয়ত আমি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খোঁজখবর রাখছি।

আরও খবর

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন নবাগত জেলা প্রশাসক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহাম্মেদ। 

তজুমদ্দিনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত!

একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না ঝিনাইদহ প্রতিনিধি চার সদস্যের পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ঋষিপাড়ায় থাকেন ফজলুল রহমান। ভ্যান চালিয়ে দিনে আয় করেন ২৫০-৩০০ টাকা। এর অর্ধেক চলে যায় কিস্তি দিতে। বাকি টাকায় দৈনন্দিন সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ফজলুর হরিণাকুণ্ডুর একটি দোকানে ডিম কিনতে এসেছিলেন। দাম শুনেই তিনি হতবাক। প্রতি হালি ডিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৬ টাকা। ফজলুর লোকমুখে শুনেছেন, সরকার ডিমের দাম কমিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দাম এত বেশি কেন? জিজ্ঞেস করতেই দোকানি বলেন, ‘নিলে নেন, না হলে অন্যখানে যান।’ পকেটের অবস্থা ভালো ছিল না ফজলুরের। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। এর আগে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাঁচাবাজারে। শাকসবজিসহ সব পণ্যের অস্বাভাবিক দামে হতাশা ঘিরে ধরে তাঁকে। আয়ের সঙ্গে খরচের হিসাব মেলাতে পারছিলেন না। ফজলুর রহমান বলেন, ১৫ দিন আগেও প্রতি পিস ডিমের দাম ছিল ১২ টাকা। এখন সেটার দাম কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সা আবার কোথাও ১৪ টাকা। হালিতে এই ১৫ দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ৬-৮ টাকা। শাকসবজি, মাছ, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ সবকিছুর দামই বেড়েছে। এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে সীমিত আয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। ২৫০-৩০০ টাকা আয়ের মধ্যে ঋণ নিয়ে কেনা ভ্যানের কিস্তির জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। বাকি ১০০-১৫০ টাকায় চাল, ডাল, তেল আর তরিতরকারি কেনা যায় না। একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না। কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সাগর হোসেন। তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার শুড়া এলাকায় থাকেন স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবা নিয়ে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ছয় সদস্যের সংসারে খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা তাঁর। সাগর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ১৫ অক্টোবর সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ১৯ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা প্রতি পিসের ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়। বুধবার থেকে এ দামে ডিম বিক্রির কথা থাকলেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। একেক জায়গায় একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছ। উপজেলা শহরের কোথাও ১৩ টাকা ৩৩ পয়সা, কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের বাজারে ১৪ টাকা করে। লাগামহীন ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ২৮০-৩২০ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকা। লাউ পিস ৫০-৬০ টাকা, আলুর ৬০ টাকা কেজি। ৩০ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। ৪০ টাকার কাঁচাকলা ৬০ টাকা। ৪০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে এদিন ঢ্যাঁড়শের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। বেগুন বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৩০-১৫০ টাকায়। ৫০ টাকার নিচে বাজারে সবজি মিলছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের বিক্রেতা খাইরুল ইসলামের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া অনেক এলাকায় বন্যা হচ্ছে। মানুষের সবজি ও কাঁচামালের ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কম। তাই সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম কমাতে হলে আগে আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, আড়ত থেকে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আশরাফুল ইসলামের। তাঁর দাবি, খামারির কাছ থেকেই প্রতি পিস ডিম কিনতে হয় ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। খুচরায় বিক্রি করছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়। আনার সময় অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে লাভ থাকে না। শুধু ক্রেতা ধরে রাখতেই ডিম বিক্রি করছেন। উৎপাদক ও পাইকার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ডিম বা ব্রয়লার মুরগির দাম খুচরা বাজারে কমবে না বলে মনে করেন তিনি। মাছের বাজারেও একই অবস্থা। এদিন সকালে হরিণাকুণ্ডু শহরের দৈনিক বাজারে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দর ১৫০-২৫০ টাকা; চ্যাঙ ও দেশি পুঁটি বিক্রি হয় ৩২০-৫০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা জয়নাল মিয়ার ভাষ্য, আড়তে তেমন মাছ আসছে না। অল্প পরিমাণে যা আসছে, অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আড়তদার কামাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আড়তে মাছ আসে। কিছু এলাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর ঘের-পুকুর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রচুর মাছ মারাও গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেশি। ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, এই এলাকায় খামারি নেই। ব্যবসায়ীরা পাবনা বা অন্য এলাকা থেকে বেশি দামে ডিম কিনেন। ফলে সরকারের বেঁধে দেওয়া দর নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবুও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি চলছে জানিয়ে ইউএনও আক্তার হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গাজীপুর শ্রীপুরে আল আরাফ হাসপাতাল রোগীদের জন্য আশীর্বাদ 

রাঙামাটির কাউখালীতে সেনা কর্তৃক তিন নারীকে   মারধরের প্রতিবাদে দুই নারী সংগঠনের বিক্ষোভ

বরিশালে বাজারে নির্মাণ হওয়া স্টলের বরাদ্দ পাওয়ার দাবীতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন 

                   

জনপ্রিয় সংবাদ