প্রতিনিধি 28 January 2025 , 12:35:57 প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতিবেদক :-মো: খালেকুল ইসলাম
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯টি পরিবারের ১১টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আসবাবপত্র, নগদ টাকা, ধান-চাল, গরু-ছাগলসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর ৩টায় উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের দেড়ানী সুতারপাড়া এলাকায়।
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চুলার আগুন অথবা বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এছামুদ্দীর ছেলে বাচ্চু মামুদের রান্নাঘর থেকে প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয় এবং দ্রুত তা আশপাশের ঘরে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ষয়ক্ষতি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার
আগুনে বাচ্চু মামুদের ৪টি ঘর, তার ছেলেদের ২টি ঘর, প্রতিবেশী আছদ্দী মামুদের ছেলে হাফিজুলের ২টি ও শরিফুলের ১টি, তছদ্দী মামুদের ছেলে মন্টুর ১টি ঘর এবং আমদ্দী মামুদের ছেলে ছোবেদ আলীর ১টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
বাচ্চু মামুদ বলেন, “আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। ৪টি ঘরের কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। একটি গরু ও ৩টি ছাগল আগুনে পুড়ে মারা গেছে। ধান-চাল, আসবাবপত্র, টিভি-ফ্রিজসহ সব পুড়ে ছাই হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
হাফিজুল ইসলাম জানান, “আমার ঘরে নগদ ৩ লাখ টাকা ছিল, যা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ২টি গরুও পুড়ে মারা গেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
প্রতিবেশী শরিফুলেরও প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে আরও চারটি পরিবারের প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকা
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেয়। তাদের স্টেশন অফিসার শরিফ আব্দুল্লাহ বলেন, “অসংখ্য স্পিড ব্রেকারের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। তবে আমরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই, ফলে আরও ২০-২৫টি ঘর রক্ষা পেয়েছে।”
সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস দল ঘটনাস্থলে এলেও তাদের তত্পরতা প্রয়োজন হয়নি।
স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা
কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লানচু হাসান চৌধুরী বলেন, “আগুনের ভয়াবহতায় ৯টি পরিবারের ১১টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এসব পরিবার এখন নিঃস্ব। আমরা প্রাথমিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় কম্বল ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করেছি।”
শীতের প্রকোপ ও দুর্ঘটনার প্রভাব
শীতের তীব্রতার মধ্যে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪০ জন নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।