প্রতিনিধি 17 March 2025 , 2:01:03 প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ আশরাফুল ইসলাম :
বিশেষ প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও।
মো.আজমির শরিফ মারজী, সহকারী পরিচালক ও উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দূদক ঠাকুরগাঁও এর নেতৃত্বে একটি চৌকস দল দূর্দান্ত প্রতাপশালী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. শেরিকুজ্জামান ও অডিটর মো. হান্নান কে ঘুষ গ্ৰহণের সময় হাতেনাতে অফিসের মধ্যে দ্বয়কে আটক করেছেন।
বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিস কর্মকর্তা ও অডিটর। যোগদান করার পর থেকে ঘুষ আর ঘুষ লেনদেনের মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছিলো, যে প্রত্যেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিকট থেকে দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করতে না, কাজের সর্বনিম্ন রেট ২০ হাজার টাকা।এই কর্মকর্তার উপরে নাকি বড় শক্তহাত রয়েছে বলে নিজেকে মহাশক্তিধর মনে করতেন।
তিনি হরিপুর উপজেলা যোগদান করার পরে ঘুষের লেনদেনে পারদর্শী এক অডিটর মজিবর রহমানকে পেয়ে স্থানীয় দালালদের সঙ্গে মিশে রফাদফায় বেশ ভালোই চলছিলো। এখনো পঞ্চগড় তেতুলিয়া বসে হরিপুর ঘুষ লেনদেনের রফাদফা মোবাইলে ওখানে বসেই এখনো চলমান রয়েছে। কখনো কখনো আওয়ামীলীগ এমপির ভাগিনা পরিচয় দিয়ে চলতো, এখন সরকার পতনের পর নিজেকে বিএনপির নেতা দাবি করে।
ইতঃপূর্বে শেরিকুজ্জামান ও অডিটর মজিবর রহমানের ঘুষ লেনদেনের বিরুদ্ধে ঘুষ দূর্নীতির স্থানীয় জনসাধারণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।এই কর্মকর্তাদ্বয়ের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন, হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্যে কমপ্লেক্স অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহায়ক জোহরা খাতুনের ছেলে মো.জহিরুল ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় হিসাবরক্ষন কর্মকর্তার বরাবরে ঘুষ লেনদেন অভিযোগ করেন। ঘুষের বিষয়ে অভিযোগে তদন্ত হলেও শেরিকুজ্জামান অজ্ঞাত কারণে এখনো বহালতবিয়তে আছেন আর অডিটর মজিবর রহমান কে বদলি করা হয়।
জোহরা খাতুনের এর ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন উপায়ন্ত না পেয়ে হরিপুর উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতির নিকট ঘুষের লেনদেন এর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। ইতঃপূর্বে হরিপুর হিসাবরক্ষণ অফিসে অবৈধ ঘুষ লেনদেনের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। হরিপুর দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মহোদয় দূদক ঠাকুরগাঁও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। এরই প্রেক্ষিতে জেলা দূর্নীতি কমিশনের একটি টিম প্রায়ই নজর রাখছিলো এই অফিসের উপর । হরিপুর উপজেলা ১নং গেদুরা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে নৈশ্য প্রহরী মো.আবদুল হামিদ সদ্য অবসর জনিত ফাইলে হিসাবরক্ষণ অফিসারের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়, এই স্বাক্ষর করার জন্য আঃ হামিদ এর নিকট ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করিলে ২২ হাজার টাকা রফা হয়। তক্ষুনি ১৭০০০ হাজার টাকা দেওয়া হয় আর বাকি টাকা যখনই দিবে তখনই প্রয়োজনীয় কাগজে স্বাক্ষর করে দিতে চায়। আঃ হামিদ ছোট পদে চাকুরি করার কারণে তার কাছে তেমন কোন টাকা নেই। সমূদয় টাকা না দেওয়ার কারনে কাগজ স্বাক্ষর প্রদানে টালবাহানা শুরু করেন। আবদুল হামিদ (১৭-৩-২০২৫) তারিখে বাকি টাকা দিতে গেলে ঘুষ লেনদেনের সময় হাতেনাতে দূদক টিমের জালে ধরা পড়ে হিসাবরক্ষণ অফিসার শেরিকুজ্জামান ও অডিটর হান্নান। এই ঘুষখোর কর্মকর্তা বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার জনসাধারণ।