প্রতিনিধি 23 March 2025 , 8:16:32 প্রিন্ট সংস্করণ
রুমা আক্তার, সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি,
গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা, মার্কিন সামরিক সহায়তা এবং ভারতের মুসলিম নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুর ১১:৩০ মিনিটে কলেজের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় ইসরায়েল, আমেরিকা ও ভারতের পতাকা অঙ্কন করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা সেসব পতাকার ওপর দিয়ে হেঁটে কলেজে প্রবেশ করেন।
এই প্রতিবাদের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন সায়েম, রোহান, ইভান, নিলয় এবং ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব মিয়া। এর আগে ‘সোহরাওয়ার্দী কলেজ পরিবার’ নামে ফেসবুক গ্রুপে এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীদের বিপুল সমর্থন মেলে।
শুধু পতাকা আঁকাই নয়, প্রতিটির ওপর প্রতিবাদী বার্তা লেখা হয়।
ইসরায়েলের পতাকায় লেখা হয় “অবৈধ সন্তান”, কারণ শিক্ষার্থীদের মতে, এটি দখলদার একটি রাষ্ট্র।
আমেরিকার পতাকায় লেখা হয় “বাপ”, কারণ তারা মনে করে আমেরিকা ইসরায়েলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
ভারতের পতাকায় লেখা হয় “দালাল”, শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, ভারত ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের পক্ষেই নীরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং নিজ দেশেও মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে।
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন,
“গাজায় নারী-শিশু হত্যা করা হচ্ছে, এটি শুধু ফিলিস্তিনের নয়, বরং গোটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আমেরিকা এই হত্যাযজ্ঞের পৃষ্ঠপোষকতা করছে, আর ভারত তাদের নীতির মাধ্যমে একই অপরাধের সহযোগী। আমরা এই তিন দেশের পতাকাকে পায়ের নিচে রেখে জানিয়ে দিচ্ছি, দখলদার ও হত্যাকারীদের প্রতি আমাদের কোনো সম্মান নেই।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এই পতাকাগুলোর ওপর দিয়ে হেঁটে যাবে, আর এভাবেই আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানাব।”
প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই শিক্ষার্থীদের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
এ বিষয়ে কলেজ প্রশাসনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন,
“এই প্রতিবাদ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই, ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের সমর্থন অটুট।”
বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চললেও দখলদার রাষ্ট্রটি হামলা বন্ধ করছে না। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের এই প্রতীকী প্রতিবাদ দেখিয়ে দিল—অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য বড় মঞ্চের প্রয়োজন নেই, শুধু সচেতনতা আর দৃঢ় সংকল্পই যথেষ্ট।