প্রতিনিধি 6 April 2025 , 9:07:26 প্রিন্ট সংস্করণ
যশোর প্রতিনিধি
যশোরের বেনাপোলে স্থল বন্দরে ল্যাগেজ পাচার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম থামছেই না। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র সহায়তায় সিন্ডিকেটের দৌরত্ম বেড়েই চলেছে। বিজিবিকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য আসছে। ল্যাগেজ সিন্ডিকেটের কারনে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হাতছাড়া হলেও ফেঁফেফুলে উঠছে বিজিবির সদস্য ও ল্যাগেজ সিন্ডিকেট। সুবেদর আব্দুল কাদেরসহ হাতেগোনা কয়েকজন বিজিবি সদস্যের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সীমান্তের সিন্ডিকেট হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। মাসুদ ওরফে বিজিবি মাসুদ, জিয়া, জনি শাহিন তরিকুল, সাঈদ, সালাউদ্দিন আরো ৮॥১০গড়ে তুলেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আর এই সিন্ডিকেটের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করছেন বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের সুবেদার আব্দুল কাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে দেদারসে আসছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধ মালামাল। এ কাজে সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছে সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি। অবৈধভাবে পাচার করে বিপুল পরিমাণ পণ্য নিয়ে আসা হচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আনা বিদেশী মদ, ফেন্সিডিল, শাড়ী, কম্বল, কিসমিস, বিভিন্ন প্রকার চকলেট, জিলেড গার্ড ব্লেড, তৈরি পোশাক, জিরা, ঔষধ এবং বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স আটক করে বেনাপোলে দায়িত্বরত বিজিবির বিশেষ টিম। এই টিমের প্রধান বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের সুবেদার আব্দুল কাদের।
সূত্র জানায়, ল্যাগেজ পার্টির সদস্যরা কাস্টমস পার হয়ে আন্তর্জাতিক প্যাসেনজার টার্মিনালে পৌছালে বিজিবির টেবিলের সামনে বেশির ভাগ সময় দাড়িয়ে থাকেন সুবেদার আব্দুল কাদের। এরপর সোর্সের সিগন্যাল পেলে ল্যাগেজ পার্টির কোন ব্যাগ তল্লাসী ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়। বিজিবির ম্যানেজ করতে ব্যাগ প্রতি ১০০০ টাকা নিয়ে থাকে। যারা টাকা দেয় না তাদেরকে নিয়ে নানা রকম টালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে আইসিপি ক্যাম্পের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চোর ছিনতাইকারীদের মত মালামাল ছিনতাই করা হয়। কাচা টাকার গন্ধে সোর্স পরিচয় দেওয়া , মাসুদ, ওরফে বিজিবি মাসুদ, জিয়া,জনি,শাহীন, তরিকুল, সাঈদ, , সালাউদ্দিন, কথায় বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে বিজিবি।
সূত্র জানায়, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য নিয়ে আসার কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হলেও বিজিবির দুর্নীতিবাজদের পকেটে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা। স্থল বন্দরের বেনাপোলের আলোচিত ল্যাগেজ পার্টির সিন্ডিকেটের কারণে রাতারাতি বনে যাচ্ছে কোটিপতি। স্থানীয়দের দাবি বিজিবির সোর্স পরিচয় দেয়া বিতর্কিত, মাসুদ, ওরফে বিজিবি মাসুদ ,জিয়া, জনি, শাহীন ,তরিকুল, সাঈদ, সালাউদ্দিন ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরী হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা ভারত থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এসব মালামাল আনে। ল্যাগেজ পার্টির দায়িত্ব হচ্ছে মাসুদ ওরফে বিজিবি মাসুদের। বিজিবির স্ক্যান মেশিন থেকে শুরু করে বাইরের টেবিল পর্যন্ত সব দায়িত্ব মাসুদের। যত অবৈধ পণ্য আসবে সবই মাসুদের নিয়ন্ত্রণে। অবৈধ পণ্য আসার পর মাসুদের গ্রীণ সিগনালের অপেক্ষায় থাকতে হয়। তার সিগনাল পেলেই পণ্য পাচার শুরু হয়। মাসুদের এসব কাজের সহযোগী রয়েছে আরো ১০/১৫ জন। এদের তৎপরতা চলে বিজিবির সিসি ক্যামেরার মধ্যে। তারপরও অদৃশ্য কারণে তারা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়া কাস্টমসের কারেন্ট মিস্ত্রি পরিচয় দানকারী সাঈদ হোসেন বর্ডারে কাস্টমসের সব লেনদেন করে। যেন সীমান্তে কাস্টমসের কাছ থেকে সাঈদ অবৈধ পণ্যের টাকা আদায়ের লিজ নিয়েছে। তরিকুল ওরফে বেনাপোল বিজিবি ক্যাম্প তরিকুলের মাধ্যমে এসএ পরিবহনে মালামাল লোড দিয়ে গন্তব্যে পাঠানো হয়। সে সবসময় পাচারকৃত মালামালের সাথেই থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ বিজিবির দায়িত্বরত সদস্যরা তাদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন। তাদের দাবি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এদের পক্ষে থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে পকেট ভরছে। নগদ নারায়ণে তুষ্ট থাকায় বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ এই চক্রকে আটক করে না। সেই সাথে দুর্নীতিবাজ সুবেদার আব্দুল কাদেরকে অবিলম্বে অপসারণ করতে ফরজ হয়ে পড়েছে। তাহলে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ৪৯ যশোর বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকীর কাছে মুঠো ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রকম তথ্য আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিব।