সারাদেশ

কাশিমপুরে বনের জমি জবরদখল করে ফ্যাক্টরি নির্মাণ,দায়িত্বে চরম অবহেলা বিট কর্মকর্তার

  প্রতিনিধি 14 April 2025 , 4:36:08 প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃমিন্টু,বিশেষ প্রতিনিধি:

গাজীপুরের প্রাকৃতিক বনের পরিবেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গাজীপুর কাশিমপুরে সরকারি শালবন দখলের হিড়িক পড়েছে।ক্ষমতাসীন কিছু অসাধু ভূমিদস্যু ও দালালদের হাত ধরে দখল হচ্ছে শালবনের মহা-মূল্যবান জমি। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দখলদারদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই দখল হচ্ছে মূল্যবান শাল বনের জমি।তবে জমি উদ্ধারে এবং দখল ঠেকাতে অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাদের উদাসীনতার অভিযোগ ও রয়েছে। সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায় ঢাকা বন বিভাগের কালিয়াকৈর রেঞ্জ আওতাধীন কাশিমপুর বিটের বিভিন্ন এলাকায় শালবনের জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন,বাড়িঘর, দোকানপাট।এছাড়াও নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে বনের সীমানা ঘেষেও নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা।বনের আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের পাশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে বন বিভাগ থেকে অনুমতি ও জমির সীমানা নির্ধারণের নিয়ম থাকলে ও তার কোনটি মানা হচ্ছে না।শুধু স্থানীয় লোকজন নয়,প্রতিনিয়তই বিভিন্ন মিল কারখানা ও ঝুট গুদামের দখলে ও চলে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বনের জমি। রাতের আধাঁরে সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে ওই সব মিল কারখানার যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করার অভিযোগও রয়েছে।এদিকে কাশিমপুর বন বিটের দক্ষিণ বাগবেড় মৌজার মাধবপুর এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে মাহবুবুল আলম গং বিরুদ্ধে বনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।জানা যায় মহানগরীর কাশিমপুরের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাগবেড় মৌজার সিএস ৫৩ দাগ ও আরএস ১৪৯,১৫০,১৫১,১৫২,১৫৩,১৫৪ এবং ১৫৫ দাগের মাঝে একই দাগেই বন বিভাগের সম্পত্তি এবং জোত সম্পত্তি।এছাড়াও আরো জানা যায়,গাজীপুরের টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল এর সহকারী কমিশনার(ভূমি)কার্যালয়ে মাহবুবুল আলম গং রা গত ০৭/০৯/২০২৩ তারিখে সীমানা নির্ধারণী মোকদ্দমা নং-১৫/২৩ দায়ের করলেও গত ২৭/০৯/২০২৩ তারিখে শুনানি হয়।কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল না হলেও স্থানীয় বিট কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করেই কোন প্রকার ডিমারকেশন ছাড়াই বনের ৫০ শতাংশ জমি,জবরদখল করে সুউচ্চ সীমানা প্রাচীরসহ শের্ট করে ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে।যার বর্তমান বাজারে জবরদখলকৃত সম্পত্তির বাজার মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

 

জবরদখলের বিষয়ে মাহবুবুর আলম গং এর উওরাধিকারী মামুন মন্ডলের মুঠোর ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

তবে সাবেক কাশিমপুর বিট কর্মকর্তা বনী শাহাদাত হোসেন জানান,আপনি যে ফ্যাক্টরি কথা বলছেন,আমার সময়ে ওই ফ্যাক্টরির ডিমারকেশন চলমান রেখে চলে এসেছি,আমি চলে আসার পরে ডিমারকেশন ব্যাপারে শুনানি করেছেন সুলাইমান সাহেব।আর আমার সময়ে ওই ফ্যাক্টরি নির্মাণ কাজ করা হয়নি,এর পরে কি হয়েছে আমার তা জানা নেই। এছাড়াও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার ডিমারকেশন এর আদেশ না পেয়ে ফ্যাক্টুরী নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই,এখন কিভাবে তারা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার আদেশ ছাড়াই ফ্যাক্টরিটা নির্মাণ করলো তা বলতে পারছিনা।

 

স্হানীয় কাশিমপুর বিট কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন বলেন,ওই ফ্যাক্টরির বিষয়ে উচ্ছেদ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।আর আপনি এগুলো জেনে কি করবেন,আপনি নিউজ করে যা করতে পারেন করেন গা”আপনি যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক,সেই বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল আমি মিয়া।কথা বলতে বলতে তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রতিবেদকের সাথে অসাধু-আচরণ করেন তিনি।

 

ফ্যাক্টরি বিষয়ে সাবেক কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম দোলন বলেন,আমি যখন কালিয়াকৈর রেঞ্জের দায়িত্বে ছিলাম,তখন ওই ফ্যাক্টরি মালিক পক্ষের মামুন মন্ডল আমার কাছে একাধিকবার গিয়েছে,তাদেরকে কোন কর্ণপাত করিনি।তবে তারা আমার পরামর্শে ডিমারকেশনের আবেদন করেছে। আমি ও সাবেক বিট কর্মকর্তা বনি শাহাদাতের আমলে এই ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়নি।আমি চলে আসার পরে হয়তো বা ফ্যাক্টরি নির্মাণ হতে পারে।তাছাড়া ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হলো,বর্তমান বিট কর্মকর্তা কেনো অ্যাকশনে যাচ্ছেন না।

 

এ বিষয়ে সহকারী বনসংরক্ষক(এসিএফ)ও কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহিদুল হাসান শাকিল বলেন,আপনাদের তথ্যের মাধ্যমে এ বিষয়টি জানতে পারলাম।কেউ যদি বনের জমিতে ফ্যাক্টরি নির্মাণ করে থাকে। তাহলে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।বনের জমির থেকে জবরদখল উচ্ছেদ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ

পবিত্র মা‌হে রমজানের আগমন উপল‌ক্ষে ‎রায়পুরে জামায়া‌তের স্বাগত মিছিল

একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না ঝিনাইদহ প্রতিনিধি চার সদস্যের পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ঋষিপাড়ায় থাকেন ফজলুল রহমান। ভ্যান চালিয়ে দিনে আয় করেন ২৫০-৩০০ টাকা। এর অর্ধেক চলে যায় কিস্তি দিতে। বাকি টাকায় দৈনন্দিন সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ফজলুর হরিণাকুণ্ডুর একটি দোকানে ডিম কিনতে এসেছিলেন। দাম শুনেই তিনি হতবাক। প্রতি হালি ডিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৬ টাকা। ফজলুর লোকমুখে শুনেছেন, সরকার ডিমের দাম কমিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দাম এত বেশি কেন? জিজ্ঞেস করতেই দোকানি বলেন, ‘নিলে নেন, না হলে অন্যখানে যান।’ পকেটের অবস্থা ভালো ছিল না ফজলুরের। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। এর আগে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাঁচাবাজারে। শাকসবজিসহ সব পণ্যের অস্বাভাবিক দামে হতাশা ঘিরে ধরে তাঁকে। আয়ের সঙ্গে খরচের হিসাব মেলাতে পারছিলেন না। ফজলুর রহমান বলেন, ১৫ দিন আগেও প্রতি পিস ডিমের দাম ছিল ১২ টাকা। এখন সেটার দাম কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সা আবার কোথাও ১৪ টাকা। হালিতে এই ১৫ দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ৬-৮ টাকা। শাকসবজি, মাছ, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ সবকিছুর দামই বেড়েছে। এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে সীমিত আয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। ২৫০-৩০০ টাকা আয়ের মধ্যে ঋণ নিয়ে কেনা ভ্যানের কিস্তির জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। বাকি ১০০-১৫০ টাকায় চাল, ডাল, তেল আর তরিতরকারি কেনা যায় না। একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না। কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সাগর হোসেন। তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার শুড়া এলাকায় থাকেন স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবা নিয়ে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ছয় সদস্যের সংসারে খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা তাঁর। সাগর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ১৫ অক্টোবর সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ১৯ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা প্রতি পিসের ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়। বুধবার থেকে এ দামে ডিম বিক্রির কথা থাকলেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। একেক জায়গায় একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছ। উপজেলা শহরের কোথাও ১৩ টাকা ৩৩ পয়সা, কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের বাজারে ১৪ টাকা করে। লাগামহীন ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ২৮০-৩২০ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকা। লাউ পিস ৫০-৬০ টাকা, আলুর ৬০ টাকা কেজি। ৩০ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। ৪০ টাকার কাঁচাকলা ৬০ টাকা। ৪০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে এদিন ঢ্যাঁড়শের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। বেগুন বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৩০-১৫০ টাকায়। ৫০ টাকার নিচে বাজারে সবজি মিলছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের বিক্রেতা খাইরুল ইসলামের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া অনেক এলাকায় বন্যা হচ্ছে। মানুষের সবজি ও কাঁচামালের ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কম। তাই সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম কমাতে হলে আগে আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, আড়ত থেকে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আশরাফুল ইসলামের। তাঁর দাবি, খামারির কাছ থেকেই প্রতি পিস ডিম কিনতে হয় ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। খুচরায় বিক্রি করছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়। আনার সময় অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে লাভ থাকে না। শুধু ক্রেতা ধরে রাখতেই ডিম বিক্রি করছেন। উৎপাদক ও পাইকার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ডিম বা ব্রয়লার মুরগির দাম খুচরা বাজারে কমবে না বলে মনে করেন তিনি। মাছের বাজারেও একই অবস্থা। এদিন সকালে হরিণাকুণ্ডু শহরের দৈনিক বাজারে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দর ১৫০-২৫০ টাকা; চ্যাঙ ও দেশি পুঁটি বিক্রি হয় ৩২০-৫০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা জয়নাল মিয়ার ভাষ্য, আড়তে তেমন মাছ আসছে না। অল্প পরিমাণে যা আসছে, অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আড়তদার কামাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আড়তে মাছ আসে। কিছু এলাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর ঘের-পুকুর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রচুর মাছ মারাও গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেশি। ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, এই এলাকায় খামারি নেই। ব্যবসায়ীরা পাবনা বা অন্য এলাকা থেকে বেশি দামে ডিম কিনেন। ফলে সরকারের বেঁধে দেওয়া দর নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবুও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি চলছে জানিয়ে ইউএনও আক্তার হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৪ ডিম ব্যবসায়ীকে জরিমানা

পাঁচবিবির মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে জামায়াতের উদ্যোগে নির্বাচনী কর্মী ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান : জর্ডানের পর মিসরেরও দৃঢ় প্রতিক্রিয়া

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে ভয়াবহ হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ